কলকাতা ব্যুরো: সোমবার বাজেট অধিবেশন শুরু আগে উত্তাল হয়ে ওঠে বিধানসভা। বিজেপির লাগাতার বিক্ষোভের মাঝেও মাথা নত করেননি তৃণমূল বিধায়করা। তাঁদের প্রয়াসেই শেষমেশ রাজ্যপাল ভাষণ দিতে পারেন। তাঁদের হাত ধরেই গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে।

মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে রাজ্য কমিটির বৈঠকে দাঁড়িয়ে নিজের মহিলা ব্রিগেডের এভাবেই প্রশংসা করলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির বিক্ষোভের মাঝে ভাষণ দিতে না পেরে স্পিকারের আসনে বেশ খানিকক্ষণ বসেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তারপর তিনি বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে তৃণমূলের মহিলা বিধায়করা রুখে দেন। বিরোধী দলের বিক্ষোভের মধ্যেও রাজ্যপালকে ভাষণের জন্য রাজি করানো হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও অনুরোধ জানান ধনকড়কে। শেষমেশ ভাষণের প্রথম ও শেষ লাইন পড়েন তিনি।

মঙ্গলবারই দলের রাজ্য কমিটি ঘোষণা করেন মমতা। একনজরে দেখে নেওয়া যাক, কে কোন দায়িত্ব পেলেন?

দলের মহাসচিব-পার্থ চট্টোপাধ্যায়

রাজ্য সভাপতি- সুব্রত বক্সি

সহ-সভাপতি- অমিত মিত্র

রাজ্যের মহিলা সভাপতি- চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য

রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি –  সৌগত রায়, ব্রাত্য বসু, দেব অর্থাৎ দীপক অধিকারী, শতাব্দী রায়, আবদুল করিম, ডেরেক ও ব্রায়েন-সহ অন্যান্যরা।

সাধারণ সম্পাদক- ফিরহাদ হাকিম, কুণাল ঘোষ, কাকলি ঘোষ দস্তিদার,শশী পাঁজা, প্রতিমা মণ্ডল, কৃষ্ণ কল্যাণী, রবি টুডু,  তন্ময় ঘোষ ও অন্যান্যরা।

সাংস্কৃতিক কমিটির চেয়ারম্যান – রাজ চক্রবর্তী

মিডিয়া সেলের দায়িত্বে- কুণাল ঘোষ, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ও অন্যান্যরা।

ছাত্র পরিষদের চেয়ারম্যান- জয়া দত্ত

সভাপতি- ত্রিনাঙ্কুর বসু

এছাড়া বেশ কয়েকটি জেলার সভাপতির নাম ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বনগাঁ জেলার সভাপতি – গোপাল শেঠ

নদিয়া উত্তরের সভাপতি- কল্লোল খান

নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যপালের ভাষণ দিয়েই বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। তাই মমতা বলছেন, মহিলা বিধায়কদের প্রয়াসেই গণতন্ত্র রক্ষিত হয়েছে। তৃণমূল সুপ্রিমো তাঁর দলের মহিলাদের প্রশংসা করে বলেন, বিধানসভায় বিজেপি চূড়ান্ত অসভ্যতা করেছে। সেখানে আমাদের মেয়েরা রুখে দাঁড়িয়েছে। মহিলাদের অনেক অসম্মান, অপমান করেছে বিজেপি। মহিলাদের অনেক কুকথাও বলা হয়েছে। তা সত্ত্বেও আমাদের মেয়েরা খুব শৃঙ্খলাপূর্ণ ভাবে ভূমিকা পালন করেছে এবং গণতন্ত্রকে বাঁচিয়েছে। আমার মহিলা ব্রিগেডকে ধন্যবাদ। বিধানসভা ও গণতন্ত্রের সম্মান রক্ষা করেছে ওরা। এটা থেকেই আগামিদিনে অন্যরা শিক্ষা নেবে।

পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগে সোমবার বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপি। যার জেরে সময়মতো ভাষণ শুরু করতে পারেননি রাজ্যপাল। একে গেরুয়া শিবিরের চক্রান্ত বলেই অভিযোগ করেন মমতা। বলে দেন, আমাদের অধিবেশন শুরু হয়েছে গতকাল। যেখানে নির্লজ্জ ভূমিকায় দেখা গিয়েছে বিজেপিকে। রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে বাজেট সেশন শুরু হয়। এটাই নিয়ম। আর সেখানে বিজেপির পরিকল্পনা ছিল অতি কলঙ্কিত। তারা চেয়েছিল গণতন্ত্রের হত্যা হোক। একটা নির্বাচিত সরকারকে কাজ করতে না দেওয়ার চক্রান্ত। হেরে গিয়েও কোনও লজ্জা নেই। তাই বিজেপির ঝামেলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই ব্যাখ্যা করেছেন তৃণমূলের চেয়ারপার্সন। 

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version