কলকাতা ব্যুরো: রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অনুরোধে ছাত্র-ছাত্রীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের তরফ থেকে আগেই ঘোষণা করা হয়েছে, পুজোর পরে ধাপে ধাপে খুলতে পারে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলি তাদের মত করে ক্যাম্পাস খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তাই নিয়ম করে ক্যাম্পাসগুলির স্যানিটাইজেশন হলেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করছে পড়ুয়াদের টিকাকরণ না হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেই করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে, আক্রান্ত হতে পারেন পড়ুয়ারা। আর সে কারণেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল, যাতে দ্রুত ছাত্র-ছাত্রীদের টিকাকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায় তার ব্যবস্থা করতে। এক্ষেত্রে সরকারের তরফ থেকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার পক্ষেই সওয়াল করেছিল তারা। সেই আবেদনে এবার সাড়া দিল রাজ্য সরকার ৷
ইতিমধ্যেই রাজ্যের স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতরের তরফ থেকে এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বিভিন্ন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে টিকাকরণ প্রক্রিয়া চালাবে রাজ্য সরকার।
উল্লেখ্য, যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি সহ রাজ্যের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের কাছে পড়ুয়াদের জন্য টিকাকরণের দাবি জানিয়েছিল। ইতিমধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পড়ুয়ার টিকাকরণ হয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার পড়ুয়াদের টিকাকরণ না হলেও শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী এবং গবেষকদের টিকাকরণ সম্পূর্ণ। তবে রাজ্য সরকারের জারি করা নয়া বিজ্ঞপ্তি হাতে পাওয়ার পর সামগ্রিকভাবে ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী সকলের টিকাকরণের উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি।
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, এমনিতে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের ক্যাম্পাসে টিকাকরণ কর্মসূচি চলবে। কিন্তু যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা বর্তমান পরিস্থিতিতে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পারবেন না, তাঁদের স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণের ব্যবস্থা করা হবে।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে টিকাকরণের দায়িত্বে থাকবেন ওই জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। তবে এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য দফতরকে পরিকাঠামোগত সাহায্য দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ কর্তৃপক্ষকে। এছাড়াও স্কুল পড়ুয়াদের টিকাকরণ যাতে দ্রুত শুরু করা যায় সেইজন্য স্কুল শিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে ছাত্র-ছাত্রীদের দ্রুত আধার কার্ড তৈরির পাইলট প্রকল্প নিয়েছে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্প বিভিন্ন স্কুলে স্কুলে পয়লা অক্টোবর থেকে শুরু হবে বলে খবর। মূলত আধার কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচি সম্পন্ন করা হবে বলে জানা গিয়েছে। সেই কাজ সম্পন্ন হলেই পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে টিকাকরণ কিভাবে করা যায় তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করা হবে ৷