কলকাতা ব্যুরো: পরশ পাথর, ঝিন্দের বন্দী হয়ে তিনি হয়ে উঠতেন ওয়েব সিরিজের দুর্ধর্ষ ভিলেন। কিন্তু সব পরিকল্পনা ভেস্তে দিল ১৫ নভেম্বর দুপুর ১২ টা ১৫। সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। শেষ হয়ে গেলো তাকে নিয়ে আগামীর যাবতীয় পরিকল্পনা। কিন্তু বারেবারেই বিভিন্ন জায়গায় সাক্ষাৎকারে, তার লেখায়, কবিতায় গত কয়েক বছর ধরেই তার চাওয়া ছিল একটাই, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যেন কাজ করে যেতে পারি। ইচ্ছে সত্যি হয়েছে অনেকটাই। শেষ চল্লিশটা দিন বেলভিউ হাসপাতালে শয্যায় থাকাকালীন সেই অভিনয় এর কাজ বা সেবা করা হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এই বয়সেও তার কাজ ছিল অনেক। তার অন্যতম, ওয়েব সিরিজের এক ড্রাগ মাফিয়ার চরিত্রে অভিনয় করা।
এ ব্যাপারে বেশ কিছুদিন আগেই কথা-বার্তা হয়েছিল পরিচালক রুদ্রনীল সেনগুপ্তর সঙ্গে। পরিচালক এক সাক্ষাৎকারে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এই বয়সে উনি কতটা এমন চরিত্রে অভিনয় করতে চাইবেন, তা নিয়ে আমাদের সং শয় ছিল। কিন্তু ওনার সঙ্গে কথা বলার পর দেখা গেল, আমাদের থেকেও অনেক বেশি উৎসাহী উনি। এমনকি চরিত্রের সঙ্গে কি কি পোশাক এবং কিভাবে চরিত্রটা করলে মানাবে, তা নিয়ে অনেক বেশী আধুনিক মনস্ক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
দুর্গা পুজোর মধ্যেই পরিচালক রুদ্রনীল বিদেশ থেকে ফিরে এসেছিলেন কলকাতায়। কিন্তু এসেই শোনেন, অসুস্থ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ফলে শুটিং পিছিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। যদিও সেই পরিকল্পনা আর বাস্তবায়িত হবে না। এদিন দুপুর থেকেই রবীন্দ্র সদন হয়ে কেওড়াতলা পর্যন্ত শোক যাত্রায় সঙ্গী ছিলেন রুদ্রনীল।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে দিয়ে ওয়েব সিরিজ করার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা রুদ্রনীল করেছিলেন বেশ কিছু আগে। গিয়েছিলেন সৌমিত্রর বাড়িতে। কিছুটা সংশয় ছিল, এমন একটা নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হবেন কিলা বাঙালির অন্যতম আইকন। কিন্তু তিনি দেখলেন, অভিনয়ের খিদে এখনো একটা বাচ্চা ছেলের মতোই তাড়া করে বেড়াচ্ছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে।
তিনি অতি বেশি উৎসাহী হয়ে কথা দিলেন কাজ করার ব্যাপারে। এমনকি স্ক্রিপ্ট কতদূর রেডি হল, সে ব্যাপারেও মাঝেমাঝেই খোঁজ নিতেন সৌমিত্র। রুদ্রনীলের আক্ষেপ, বাস্তবে বাঙালি সংস্কৃতির সামনের সারিতে থাকা অভিনেতাকে আর বাঙালি দেখতে পেল না, এমন একটা ব্যতিক্রমী চরিত্রে। যা দেখেছিল শেষ, ঝিন্দের বন্দীতে।
Previous Articleরাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ এক ধাক্কায় কমলো ৭০০ র নিচে
Next Article ১৯ নভেম্বর রামনগরে মেগাশো করবেন শুভেন্দু অধিকারী