কলকাতা ব্যুরো: মঙ্গলবার ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের পরিকল্পনা ‘অগ্নিপথ’-এর কথা ঘোষণা করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তারপর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছিলেন সেনাবাহিনীতে চাকরি করার স্বপ্ন দেখা বহু মানুষ। সেই অসন্তোষ থেকেই তীব্র বিক্ষোভ শুরু হল বিহারে। বৃহস্পতিবার রেল ও সড়ক পথ অবরোধ করল বিক্ষোভকারীরা। ট্রেন ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় প্রতিবাদীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতা করে স্লোগানও দেন তাঁরা।

জানা গিয়েছে, গত দু’দিন ধরেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে বিহার। একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস চালাচ্ছে পুলিশ। পালটা পুলিশের দিকে পাথর ছোঁড়ে প্রতিবাদীরা। জাহানাবাদ এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে বন্দুক তাক করে পুলিশ। রেললাইনে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন প্রতিবাদীরা। এমনকি রেল লাইনের উপরেই ডন বৈঠক করতে শুরু করেন অনেকে। সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য তাঁরা কত পরিশ্রম করেছেন, সেই কথা সকলকে বোঝাতে চান তাঁরা।

প্রসঙ্গত, অগ্নিপথের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা বাহিনীর তিন বিভাগে চার বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হবে। নিয়োগ করা হবে ৪৫ হাজার তরুণকে, যাদের বয়স ১৭ বছর ৫ মাস থেকে ২১ বছরের মধ্যে। চার বছর হওয়ার পর সব বিভাগের ১০০ শতাংশ সেনার চাকরি চলে যাবে। তারপর তাদের মধ্যে থেকে পূর্ণাঙ্গ সময়ের জন্য ২৫ শতাংশ সেনাকে পুনরায় নিযুক্ত করবে সরকার। যাঁদের চাকরি থাকবে না, তাঁদের এককালীন ১১ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকার প্যাকেজ দেওয়া হবে, জানিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তবে অবসরপ্রাপ্ত সেনাদের মাসিক পেনশন দেওয়া হবে না। স্বল্প মেয়াদি নিয়োগের ফলে সরকারের ৫.২ কোটি টাকা বাঁচবে।

এই কথা জেনেই ক্ষুব্ধ সেনাবাহিনীতে কাজ করতে চাওয়া জনতা চার বছরের চুক্তিভিত্তিক চাকরির কথা জেনে এখন পিছিয়ে আসতে শুরু করেছেন। অন্য ক্ষেত্রে চাকরি করার কথা ভাবছেন। তাঁদের মতে, চার বছর সেনায় কাজ করে ফের অন্য ধরণের চাকরির জন্য চেষ্টা করতে হবে অর্থাৎ চার বছর নষ্ট। যদিও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, চার বছর পর বসিয়ে দেওয়া ৭৫ শতাংশ সেনার সরকারের অন্যান্য কাজে বা বেসরকারি অফিসে চাকরি পেতে অসুবিধা হবে না কারণ, সেনায় কাজ করার সুবাদে তাঁরা কর্মক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version