কলকাতা ব্যুরো: তার গতিবিধি জানার জন্য একটি বাঘের গলায় রেডিও কলার পরিয়ে ছাড়া হল সুন্দরবনের জঙ্গলে। ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর এর জন্য একটি প্রকল্প নিয়েছিল রাজ্য বনদপ্তর ও ডাবলু ডাবলু এফ। বসিরহাটের হারিখালির জঙ্গলে ওই রেডিও কলার পড়ানো বাঘটি ছাড়া হয়। মূলত বাঘ এবং মানুষের মধ্যে বোঝাপড়ার বিষয়টি বুঝতে চায় বনদপ্তর, ওই রেডিও কলারের প্রযুক্তি ব্যবহার করে। রাজ্যের মুখ্য প্রধান বানপাল বিনোদ কুমার যাদব এই তথ্য জানিয়েছেন।

আগামী দিনে প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বাড়াতে নতুন পরিকল্পনা হিসেবে স্যাটেলাইট রেডিও কলার আরো তিনটি বাঘের গলায় পড়ানোর পরিকল্পনা করেছে বনদপ্তর। মূলত বাঘের গতিবিধি জানার চেষ্টাতেই এখন প্রযুক্তির উপর নির্ভরতা বাড়াচ্ছে বনদপ্তর। তাতে একদিকে যেমন বাঘের নিরাপত্তা বাড়বে, তেমনি বাঘের আক্রমণে মানুষ মারা পরার ঘটনাও কমবে।

সুন্দরবনের বাঘের গতিবিধি এবং মন বুঝতে এর আগেও একটি বাঘকে গলায় রেডিও কলার পড়ানো হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেই রেডিও কলার নষ্ট হয়ে যায়। তবে বনদপ্তর মনে করে, প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করেই সুন্দরবনের জঙ্গল এবং জীবজগতকে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব। মূলত বাঘের নিরাপত্তার জন্য তাই একদিকে যেমন চোরা শিকারিদের ঠেকানো জরুরী, একইসঙ্গে প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাঘের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করার দিকে জোর দিচ্ছে বনদপ্তর।

রাজ্যের মুখ্য প্রধান বনপাল বিনোদ কুমার যাদব মনে করেন, সুন্দরবনের বাঘ আসলে মানুষ খেকো নয়। মানুষ মারা পড়ে বাঘের সামনা সামনি চলে গেলে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বনদপ্তর দেখেছে, একেবারে বাঘের সামনে পড়ে যাওয়ায় মানুষ আহত হয়েছেন এবং প্রচুর পরিমাণে দেহ থেকে কম সময়ে বেশি রক্ত বেরিয়ে যাওয়ায়, তাকে তিন চার ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা করার সুযোগ না পাওয়াতেই মৃত্যু হয়েছে মানুষের।

আগামী দিনে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে সুন্দরবনের বাঘের গতিবিধি আচার-ব্যবহার আরো বেশি করে নজরে রাখতে চায় বনদপ্তর। তাদের এখন মূল লক্ষ্য, যতটা সম্ভব বনের প্রাণীকে বনের মধ্যেই আটকে দেওয়া, আর মানুষকে তার নিজের এলাকায় রাখা।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version