কলকাতা ব্যুরো: রাস্তার পাশে পড়ে রয়েছে একের পর এক দেহ। রক্তে ভেসে যাচ্ছে চতুর্দিক। মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার বোমার খোল। হাড়হিম করা কাণ্ড দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের গোপালপুর গ্রামে। পঞ্চায়েত সদস্য এবং দুই তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে গলা কেটে খুনের ঘটনায় (TMC Leader Killed) ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো। তবে কে বা কারা এই কাণ্ড ঘটাল, তা এখনও জানা যায়নি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন মাঝি (৩৮), ভূতনাথ প্রামাণিক(৩৩) এবং ঝন্টু মাঝি (৩৩) নামে দুই তৃণমূল সদস্য বাড়ি থেকে বেরোন। তাঁরা প্রত্যেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধর্মতলা এলাকার বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। তাঁরা তিনজনই বাইক চড়ে যাচ্ছিলেন।

অভিযোগ, পিয়ার পার্কের কাছে দুষ্কৃতীরা তাঁদের পথ আটকায়। স্বপনকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে দুষ্কৃতীরা। ভয় পেয়ে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন ভূতনাথ এবং ঝন্টু। তবে দুষ্কৃতীরা তাঁদেরও লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এরপর গলার নলি কাটা হয় বলেও অভিযোগ। তারপরই এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।

এরপর স্থানীয়রা দেখেন, রক্তে ভেসে যায় চতুর্দিক। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে তিনটি দেহ। রাস্তায় পড়ে রয়েছে বাইকগুলিও। খবর পাওয়ামাত্রই নিহতদের পরিজনেরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। খবর পায় ক্যানিং থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের অনুমান, গুলি করে খুনের পর গলার নলি কেটে দেওয়া হয় নেতা এবং দুই তৃণমূল কর্মীর (TMC Leader Killed)। তবে এই খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে চাপানউতোর।

ক্যানিংয়ে পঞ্চায়েত সদস্য-সহ তিন তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সিদ্ধিনাথ গুপ্তা জানান, এই ঘটনায় ইতিমধ্যে পুলিসের কাছে একাধিক সূত্র এসেছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি তা সমাধান হবে বলেও জানান তিনি।

বারুইপুর জেলা পুলিস সুপার মিস পুষ্পা জানান, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক যোগ মেই। তিনি আরও জানান, এদিন ক্যানিংয়ের গোপালপুর অঞ্চলের তিনজন তৃণমূল কর্মীর খুনের ঘটনায় কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা না গেলেও তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। খুব শীঘ্রই দোষীরা গ্রেফতার হবে।

পাশাপাশি ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশ রাম দাস জানান, বৃহস্পতিবার ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি নিয়ে ডাকা বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন স্বপন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল কর্মী ঝন্টু হালদার ও ভূতনাথ প্রামাণিক। বাইকে চেপে যাওয়ার সময় কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁদের উপর হামলা চালায়। প্রথমে গুলি করা হয় তাঁদের। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায়ও কোপ মারা হয় তাঁদের। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনজন।

তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) দাবি, এই ঘটনার নেপথ্যে বিজেপিই রয়েছে। তবে এভাবে তৃণমূলকে দমিয়ে রাখা যাবে না বলেও চ্যালেঞ্জ তাঁর।

যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের বলেই পালটা দাবি তাঁর।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version