কলকাতা ব্যুরো: দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টি কমলেও ঝাড়খন্ডে তা অব্যাহত। ফলে সেখানকার নদীগুলি ফুঁসছে জলের চাপে। এই অবস্থায় বাধ গুলি থেকে বিপুল জল ছাড়াতে এ রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত মাসের তুলনায় গত ১৫ দিনে প্রায় দ্বিগুন পরিমান জল থেকে ছাড়তে হচ্ছে বাঁধ গুলি থেকে। ডিভিসির জলের চাপ কমাতে দুর্গাপুর থেকে রেকর্ড জল ছাড়ায় প্লাবন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। একইসঙ্গে শুক্রবার থেকে প্রথমে মালদা ও দুই দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। পরবর্তীতে সেই বৃষ্টিতে ভাসবে ডুয়ার্সও।
চলতি বছর জল ছাড়ার সব রেকর্ড ভেঙে যাচ্ছে। দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে বর্তমানে ২ লক্ষ ৩১ হাজার ২৪৮ কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে। ফলে বাঁকুড়া, হাওড়া এবং হুগলির আরও বিস্তীর্ণ এলাকা আরো প্লাবিত হবে। বাঁধে প্রবল জলের ধাক্কায় নতুন বিপদের আশংকা তৈরি হয়েছে। ফলে গভীর রাতে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। গত ১ অগস্ট দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ৫৭৫ কিউসেক জল ছাড়া হয়। এখনও পর্যন্ত এটাই সর্বাধিক ছিল। কিন্তু আজ জল ছাড়ার সেই রেকর্ডও কার্যত ভেঙে গেল।
আপাতত বানভাসি মানুষকে রক্ষা করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন প্রশাসনের কাছে। কিন্তু এই বন্যায় বিপুল পরিমাণ ফসল ও ফুলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেছেন, বানভাসি এলাকায় জল নামলে চাষের ক্ষয়ক্ষতির অবস্থা বোঝা যাবে। কিন্তু যে পরিমান জল ছাড়া হচ্ছে তাতে হুগলি, হাওড়া, বর্ধমানে ফসলের ক্ষতির আশংকা রয়েছে। একই সঙ্গে ফুলচাষে এবার পুজোর আগেই বড় সংকট আশঙ্কা করছেন চাষীরা। গোটা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা। এই অবস্থায় একদিকে করোনা নিয়ন্ত্রণ, অন্যদিকে দুর্গাপুজোর আবহে বন্যা কতটা পরিস্থিতি আরো জটিল করবে, সেই আশঙ্কাতেই প্রমাদ গুনছে প্রশাসন।