কলকাতা ব্যুরো: তালিবানের দাপটে ত্রস্ত আফগানিস্তানের মানুষজন। ইতিমধ্যেই দেশ ছেড়েছে হাজারো মানুষ! বাকিরাও প্রাণ-মান নিয়ে পালাতে পারলে বাঁচে। ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে সে দেশের ছবিটা। দেশ দখলে নিয়ে যা খুশি তাই করছে তালিবান। উঠে পড়ছে শিশুদের নাগরদোলায়। খেলার মাঠ থেকে জিম, দাপাদাপি চলছে সর্বত্র। শিশুদের মেরি-গো-রাউন্ডে যখন আমোদে মেতেছে ‘আধ বুড়ো’ জঙ্গির দল, তখন কাবুলের এক বিমানবন্দরে দেখা গেল মর্মান্তিক ছবি। একটি ফল সবজি রাখার বাক্স পড়ে রয়েছে সেখানে। তাতে শোয়ানো একা একটি শিশু অকাতরে কেঁদে চলেছে।
আফগানিস্তান রবিবার থেকেই তালিবানের দখলে। সেই শক্তির কাছে পরাস্ত মানবতা। অন্তত বিমানবন্দরে একা পড়ে থাকা সাত মাসের শিশুর ছবিটি দেখে তেমনটাই বলা যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবিটি ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, প্লাস্টিকের একটি ক্রেটে আধ শোওা অবস্থায় কেঁদে চলেছে একরত্তি। চার পাশ ফাঁকা। বোঝাই যাচ্ছে এই কান্না থামানোর জন্য কোনও আপনজনের হাত নেই ধারে কাছে। জানা গিয়েছে, সে এক শিশুকন্যা। বয়স সাত মাসের কাছাকাছি।
উল্লেখ্য, সোমবার কাবুলের বিমানবন্দরে হাজার হাজার মানুষের ভিড়ের মাঝেই এই শিশুটি হারিয়ে যায় বলে মনে করা হচ্ছে। এদিন হাজার হাজার মানুষের ভিড় ছিল কাবুলের বিমান বন্দরে। কাবুলের হামিদ করজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এই শিশুটিকে পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। বিমানবন্দরে একটা ছোট্ট বাক্সের মধ্যে পড়ে রয়েছে ফুটফুটে এক নিঃসঙ্গ শিশু। কার সন্তান, কী ভাবেই বা এখানে এল, কেনই বা এভাবে পড়ে রয়েছে কোনও প্রশ্নেরই উত্তর নেই। সবটাই বলা হচ্ছে অনুমানের ভিত্তিতে। এই ছবি প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাচ্ছে সভ্য সমাজকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর তুরস্কের ভূমধ্যসাগরের উপকূলে মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল অ্যালান কুর্দি। ছোট্ট ছেলেটা লাল গেঞ্জি আর নীল হাফ প্যান্ট পরা অবস্থায় পড়েছিল সাগরের তটে মুখ গুজে। ছবিটি ঝড় তুলেছিল গোটা দুনিয়ায়। সিরিয়ার পরিযায়ী সমস্যার নগ্ন রূপটা সে তুলে ধরেছিল বিশ্বের সামনে। আফগানিস্তানের এই শিশুটির ছবি মনে করাচ্ছে অ্যালানের স্মৃতি।