কলকাতা ব্যুরো: দীঘায় পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনীর সাহায্য চাইল প্রশাসন। দীঘায় প্রবল বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যেতে শুরু করেছে। বেশ কিছু বাঁধ ভাঙতে শুরু করেছে। সমুদ্রর জল ক্রমশ বাড়ছে। এই অবস্থায় বেশকিছু গ্রামে জল ঢুকে যাওয়ায়, সেখান থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সেনা তলব করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
এদিকে ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে স্থলভাগের দিকে এগিয়ে আসা যশ কে নিয়ে একদিকে জল্পনা, অন্যদিকে আতঙ্ক সমানতালে বাড়ছে। রাজ্যের জন্য তুলনায় সামান্য হলেও স্বস্তির খবর, দীঘা থেকে কিছুটা দূরে ওড়িশার বালাসরে সাইক্লোন স্থলভাগে ধাক্কা দেবে। কিন্তু এরপরেও প্রশ্ন থাকছে এক বছর আগের আম্পানের ক্ষতির স্মৃতি নিয়ে।
এদিন সকাল থেকে প্রবল বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর দীঘা, বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ সমুদ্র উপকূলবর্তী গ্রামগুলিতে পুলিশ গিয়ে দ্রুত গ্রামগুলি ফাঁকা করার জন্য বাসিন্দাদের তারা তাড়া দিতে থাকেন। কিন্তু কিছু এলাকা ফাঁকা হলেও অধিকাংশ জায়গাতেই প্রতি বাড়িতেই অন্তত একজন করে লোক থেকে গিয়েছে। ফলে এরা বুধবার বিপদের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের।
আবহাওয়া দপ্তর অনেকটাই জোর দিয়ে বলছে, এ রাজ্যে যশের ক্ষতি আমপানের মত হওয়ার কথা নয়।
অন্যদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, আম্পানের থেকে বেশি দুর্যোগ হবে এ রাজ্যের অন্তত কুড়িটি জেলায়। যশের ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে হিসেব কষে এখন থেকেই রাজ্য সরকার সতর্ক করতে শুরু করেছে জেলা প্রশাসনকে। প্রশ্ন উঠছে, এক বছর আগেও আম্পান মোকাবিলায় রাজ্য, কেন্দ্র, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন একযোগে কোমর বেঁধে নেমেছিল। বহু আগে থেকেই আবহাওয়া দপ্তর সতর্ক করেছিল। কিন্তু তার পরেও মৃত্যু ১০০ ছাড়িয়ে যায়। আম্পানের সেই স্মৃতি সামনে রেখেই বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং পরিবেশ কর্মীরা বলছেন, যত আগে থেকে সর্তকতা বা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হোক না কেন, মৃত্যু যদি আটকানো না যায়, সে ক্ষেত্রে সব চেষ্টাই বৃথা হয়ে যাওয়ার শামিল হবে। তাই প্রশাসনকে যেভাবেই হোক মৃত্যুতে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
এক্ষেত্রে অবশ্য প্রশাসন বা সরকারের থেকেও আমজনতার ভূমিকা একটা বড় প্রভাব রাখে বলে মনে করেন অনেকেই। জেলায় জেলায় ফ্লাড সেন্টারে গত দুদিন আগে থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া শুরু হলেও, এখনো সুন্দরবন, পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র এলাকায় বহু গ্রামে লোকজন থেকে গিয়েছেন।
তাদের যুক্তি, একদিকে বাড়িঘর ছেড়ে, অন্যদিকে গবাদিপশুকে ফেলে দিয়ে ফ্লাড সেন্টার গেলে সমস্যা তৈরি হবে। প্রশাসনের বক্তব্য, এদের জন্যই পুরোপুরি বিপর্যয় ঠেকানো যাচ্ছে না। কারণ প্রশাসন চেষ্টা করলেও সহগোগিতা করে সবাই নিরাপদ জায়গায় যেতে রাজি নয়। ফলে এই সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। এরা নিশ্চিত বিপর্যয়ের সামনে থেকে যাচ্ছেন।
যদিও যশের বিপর্যয় ঠেকাতে সব রকম ভাবে প্রস্তুতি নিয়ে মানুষকে সতর্ক করার কাজ সরকার চালিয়ে যাচ্ছে। চালাচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন।