কলকাতা ব্যুরো: রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের তত্বাবধানে ভালভাবেই মিটেছে কলকাতার পুরভোট। ভোট এবং ভোটের ফলপ্রকাশের দিন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সন্তুষ্ট রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তাই আগামী ২২ তারিখ চার পুরনিগমের ভোটের দায়িত্ব রাজ্য পুলিশের উপরেই দেওয়া হল। যদিও বর্তমান করোনা আবহে ওই চার পুরসভার ভোট স্থগিতের দাবিতে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে তার শুনানি হওয়ার কথা। এদিকে নির্বাচন কমিশন ভোটের জন্য যেসব পর্যবেক্ষকদের যুক্ত করেছিল, তাঁদের পাঁচজনই বুধবার পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে কর্মীদের মধ্যেও আতঙ্ক বেরচ্ছে। এই অবস্থায় হাইকোর্টে মামলায় ভোটের ভবিষ্যৎ কি হয় তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বুধবার নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠকের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানালেন কমিশনের কর্তারা। আসানসোল, চন্দননগর, শিলিগুড়ি, বিধাননগর – এই চার পুরসভার ভোট হবে রাজ্য পুলিশ দিয়ে। প্রতিটি বুথে থাকবে সশস্ত্র পুলিশ। বাকি তিন পুরসভায় কিছুটা কম থাকলেও বিধাননগরে হুহু করে ছড়াচ্ছে করোনা। ইতিমধ্যেই বাইশটি এলাকায় কনটেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে ২২ জানুয়ারি ভোট হলে তারপরে বিধাননগরের হাল কি হবে এখন সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয়।
চার পুরনিগমের ভোট সুষ্ঠু করতে মোট ৫ জন বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে কমিশন। বুধবার দুপুরে তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মূলত কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী ভোট প্রচারে স্বাস্থ্যবিধি মানে হচ্ছে নাকি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে পর্যবেক্ষকদের দিক নির্দেশ করার কথা। পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক শেষ হওয়ার পরই মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে আলোচনায় বসেন নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের। সেখানেই রাজ্য পুলিশের তত্বাবধানে ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। হু হু করে প্রতিদিনই সংক্রমণ বাড়ছে। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের আনা ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছে কমিশন। এর আগে বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা ভিন রাজ্য থেকে এখানে এসেছিলেন ভোটের ডিউটি করতে। কিন্তু পরে দেখা যায়, তাঁদের অনেকেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
এবার সেই ঝুঁকি এড়াতে ভিন রাজ্য থেকে নিরাপত্তারপক্ষীদের ভোটের কাজে আনার পক্ষপাতী নয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজ্য পুলিশের উপরই তাই ভরসা রাখা হচ্ছে। কমিশন সূত্রে খবর, কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এবং ভোটারদের ভয় কাটাতে প্রতিটি বুথে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করার কথা বলেছে নির্বাচন কমিশন।