কলকাতা ব্যুরো: মাঝে মাঝে কেউ সামান্য বেখেয়াল হলে বা বোকামো করলে তার পিছনে লাগা কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তার প্রমাণ ১৫ বছরের কিশোরীর আত্মহত্যা। যারা যারা তাকে নিয়ে মজা করছি ভেবে হাসি ঠাট্টা করতে গিয়ে পেছনে লাগছিলেন, হাসির ছলে এমন কিছু মন্তব্য করছিলেন যা অপমানজনক, এই ঘটনার পরে তারা কি সত্যিই নিজেদেরকে ক্ষমা করতে পারবেন? শুক্রবার সোনারপুর থানা এলাকার নাসার এলাকায় নিজেদের মুদিখানা দোকানে জিনিসপত্র বিক্রি করছিলেন ওই কিশোরী। এ সময় তার বাবা গিয়েছিলেন বাইরের কাজে।

দোকানে আসা ক্রেতাদের জন্য জিনিসপত্র যখন ভর্তি এবং ওজন করছেন, তখন একজন ক্রেতা তার মোবাইলটা চান। তিনি টাকা আনতে ভুলে গেছেন এই কথা বলে ফোন করে টাকা আনার কথা জানান। তাকে বিশ্বাস করে সরলমনেই কিশোরী মোবাইলটি তাকে দিয়ে দোকানের কাজে লেগে যান। বেশ কিছুক্ষণ পরে যখন ক্রেতার ভিড় ফাঁকা হয়ে গিয়েছে তখন তিনি খেয়াল করেন তার মোবাইলটি নেই। তখনই সেই ক্রেতার কোথাও তার মাথায় আসে। তিনি যখন বুঝতে পারেন যে সে ক্রেতাই তার মোবাইলটি নিয়ে পালিয়ে দিয়েছে, তখন দোকানের বাইরে এসে চিৎকার-চেঁচামেচি জুড়ে দেন। শুরু করেন কান্না।

এরইমধ্যে দোকানে চলে আসেন তার পরিবারের লোকজন। বেরিয়ে আসেন আশপাশের অন্যান্য দোকানদাররাও। তারাই তাকে মোবাইলে এইভাবে অচেনা লোককে দিয়ে দেওয়ায় মৃদু হাসি ঠাট্টা করেন। এমনকি তাকে বোবা কালা বলেও মশকরা করার চেষ্টা করেন।

তখনকার মত ঘটনা মিটে গেলে এরপরে ওই কিশোরী চলে যান কাছেই তাদের বাড়িতে। তার মা তখন দোকানে চলে যান ক্রেতার ভিড় সামলাতে। আর তার বাবা থানায় অভিযোগ জানানোর জন্য চিঠি লিখতে বসেন। এরই মধ্যে অপমানে ঘরে গিয়ে গলায় দড়ি দেয় ওই কিশোরী। বাড়ির লোক জানার পরই তাকে কোন রকমে নিয়ে যাওয়া হয় বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু রাতে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version