কলকাতা ব্যুরো: ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় অভিযোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না ৷ কলকাতা হাইকোর্টে জানালেন মামলাকারীরা। এরপরেই প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ মামলাকারীদের উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ-সহ হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ২৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
মঙ্গলবার ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় তৃতীয় দফায় তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করে সিট ও সিবিআই। সিটের তরফে আইনজীবী অয়ন ভট্টাচার্য বলেন, সিটের হাতে মোট ৬৮৯টি অভিযোগ ছিল। তারমধ্যে ১টির তদন্ত বাকি ছিল।
পাশাপাশি আরেকটি মামলা নতুন করে সিবিআই সিটকে পাঠিয়েছে। ফলে তাদের হাতে ২টি মামলার তদন্ত বাকি রয়েছে। এছাড়াও মোট ৩২৩টি রিট পিটিশন দায়ের হয়েছিল ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় ৷ একই মামলা একাধিকবার রয়েছে দেখে তা বাদ দিয়ে ২৯০টি মামলা হয়। তারমধ্যে ১৩৮টি মামলা ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১০৪টি মামলায় এফআইআর দায়ের হয়েছিল। ৬২টিতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। আর ৮ টির তদন্ত চলছে। ২৩টি মামলা সিবিআইয়ের কাছে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
সিবিআই-এর তরফে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন মোট ৪৮টি মামলা হস্তান্তর করেছিল ৷ এছাড়া ব্যক্তিগত তিনটি আলাদা অভিযোগ এসেছিল তাদের কাছে ৷ তার মধ্যে ২০ টিতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ১৮টি মামলায় আর তদন্তের প্রয়োজন নেই বলে মনে করছে সিবিআই। ২৮টি মামলায় তদন্ত এখনও বাকি রয়েছে। ৪টি মামলা সিটকে পাঠানো হয়েছে।
মামলাকারী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল, অনিন্দ্যসুন্দর দাস আদালতে জানান, তাঁদের অভিযোগের কোনও সুরাহা করছে না পুলিশ ৷ এমনকী নতুন করে অভিযোগও নেওয়া হচ্ছে না। রাজ্য অভিযোগ গ্রহণ করলেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
পাল্টা রাজ্যের এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, মামলাকারীদের হলফনামা থেকে মোট ২৪৩টি অভিযোগ পেয়েছিল রাজ্য ৷ তার মধ্যে ২২টিতে ফোন নম্বর পাওয়া যায়নি৷ ৮৬টি ক্ষেত্রে তাঁরা অন্য কোথাও চলে গিয়েছে ৷ অনেকগুলো অভিযোগের পুনরাবৃত্তি হয়েছে।
এরপরেই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ মামলাকারীদের উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ-সহ ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। উল্লেখ্য, রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে ভোট-পরবর্তী হিংসা ও ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল একাধিক জনস্বার্থ মামলা। সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট খুন, ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগের তদন্তভার দিয়েছিল সিবিআইয়ের হাতে ৷ পাশাপাশি অন্যান্য কম গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে সিটকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল।