কলকাতা ব্যুরো: তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনেই বাজিমাত সব্যসাচী দত্তের। বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের শিরোপা মাথায় না উঠলেও পুরনিগমে জয় ছিনিয়ে নিলেন সব্যসাচী দত্ত। জয় নিশ্চিত হতেই সস্ত্রীক হাজির হলেন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে। পেলেন উপহার।
২০১৫ সালে নতুন করে তৈরি হয়েছিল বিধাননগর পুরসভা। সে বছরের অক্টোবরে তৃণমূলের হয়ে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হন সব্যসাচী দত্ত। জয়ীর হাসি হাসেন তিনি। তবে ৪ বছর পর ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর ঘাসফুল শিবিরের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয় তাঁর। মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেন। রাজনৈতিক মহলে শিবির বদলের জল্পনাও তৈরি হয়েছিল। সেই গুঞ্জনকে সিলমোহর দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন সব্যসাচী। অমিত শাহের হাত ধরে পদ্ম শিবিরে নাম লেখান। দলে যোগের ‘উপহার’ হিসাবে বিধানসভা ভোটের টিকিট পান। গেরুয়া শিবিরের হয়ে লড়ে পর্যুদস্ত হন। সুজিত বসুর বিরুদ্ধে ভোটে লড়ে হেরে যান।
এরপরই ফের দলবদল করেন সব্যসাচী। চলতি বছরেই তৃণমূলে ফেরেন তিনি। এরপরই বিধাননগর পুরভোটে তৃণমূলের হয়ে লড়বেন সব্যসাচী দত্ত। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয় তাঁকে। দল যে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়নি, তা প্রমাণও করে দিলেন সব্যসাচী। পুরনিগমের ভোটে ৪ হাজার ৬৪৪ ভোটে জয়ী হলেন তিনি। জয় নিশ্চিত হতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন সব্যসাচী। তাঁকে প্রণাম জানিয়ে আর্শীবাদ চান। সেই সময়ই জানিয়েছিলেন সাক্ষাত করতে যাওয়ার কথা।
সেই মতোই সোমবার বেলা পৌনে বারোটা নাগাদ সস্ত্রীক কালীঘাটে পৌঁছন সব্যসাচী দত্ত। তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে সাক্ষাতের পর বাইরে বেরিয়ে সব্যসাচী বলেন, সবটাই দলনেত্রীর কৃতিত্ব। জানা গিয়েছে, জয়ের পর মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি গিয়ে উপহারও পেয়েছেন দত্ত দম্পতি। সব্যসাচীর স্ত্রীকে শাড়ি দিয়েছেন তাঁদের প্রিয় ‘দিদি’। এদিন মমতার সঙ্গে সাক্ষাতের পর বেরিয়ে সব্যসাচী বলেন, দিদি ওঁকে শাড়ি দিল। দিদি আর কী বললেন? তাঁর জবাব, বললো জায়গাটা দেখে রাখ। মানুষের কোনও অসুবিধা যাতে না হয়। আরও সুন্দর করে কাজ করতে হবে। বাকি কাজগুলি দিয়ে দিবি দেখে নেব।
তৃণমূল নেতা বলেন, জয়ের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ নিতে গিয়েছিলাম। সব্যসাচী সহাস্যে আরও বলেন, “দিদি আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ভ্যালেন্টাইন্স ডে তো ও তোমাকে কী উপহার দিয়েছে? স্ত্রী জানিয়েছিল, এখনও পর্যন্ত কোনও উপহার পায়নি সে। এরপরেই লতাদিকে বলে একটি শাড়ি আনিয়ে স্ত্রীকে দিয়েছেন। দিদি আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এদিন সাংবাদিকদের শাড়িটি দেখান সব্যসাচী-জায়া।
এরপরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িত যান সব্যসাচী ও তাঁর স্ত্রী। বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। পাশাপাশি এদিন চেতলায় মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে যান তিনি।
উল্লেখ্য, সব্যসাচী দত্তর জয়ের খবর সামনে আসার পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি আরও একবার বিধাননগরের মেয়র পদে বসতে চলেছেন তিনি? এই প্রশ্নের জবাবে সব্যসাচী জানান, এই বিষয়ে দল যা সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই চূড়ান্ত। এদিকে, এই প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দল পর্যবেক্ষণ করছে। দল দেখবে। আমরা সকলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।
এদিকে কে হবে বিধাননগরের মেয়র? এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, এই সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদি তিনি বলেন, রাস্তার ধারে তৃণমূলের পতাকা নিয়েও দাঁড়াতে পারি।