কলকাতা ব্যুরো: সিদ্ধান্ত বদলে আবারও পুরনো দলে ফিরলেন বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত। বৃহস্পতিবার বিধানসভার সদস্য হিসাবে শপথ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তিনজন। সূত্রের দাবি, এই কর্মসূচীর আগেই মমতা তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়ে দিয়েছিলেন সব্যসাচীর ‘ঘরে ফেরা’ পাকা ৷ সংবাদমাধ্যমে সেই তথ্য প্রকাশ্যে আসার কিছুক্ষণের মধ্যে সেই ‘পাকা’ কথাই বাস্তব করে দেখালেন সব্যসাচী৷ বিধানসভাতেই দলবদলে আবারও তৃণমূলে ফিরলেন তিনি।
এদিন পুরনো দলে সব্যসাচীকে স্বাগত জানান তৃণমূলের প্রথম সারির দুই নেতা তথা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ হাকিম। ‘ঘরের ছেলে’ ঘরে ফেরায় তাঁরা দু’জনেই যে খুশি, তা তাঁদের শরীরী ভাষা থেকেই স্পষ্ট ছিল। খুশি ছিলেন সব্যসাচীও। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, আবেগের বশেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন তিনি। তবে কি আবেগ ভরা মোহ কেটে যাওয়াতেই ফের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরলেন সব্যসাচী? এই প্রসঙ্গে অবশ্য একটি বাক্যও খরচ করেননি তিনি।
প্রসঙ্গত, এদিনের দলবদল কর্মসূচিতে খুব কম কথা বলেছেন বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র। যেটুকু বলেছেন, তার সারমর্ম হল, ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত একুশ পর্যন্ত তিনি যে বিধায়ক পদে থাকতে পেরেছেন, তার প্রধান কারণই হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, মাঝে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল বলেই আবেগের বশবর্তী হয়ে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো-সহ সকলে তাঁকে ফিরিয়ে নেওয়ায় তিনি আপ্লুত। আবারও নতুন করে তাঁর পথ চলা শুরু হবে বলে জানান সব্যসাচী।
তবে এদিনের সাংবাদিক সম্মেলন চলাকালীনই ফিরহাদ হাকিমকে বলতে শোনা যায়, তিনি বারবার বারণ করা সত্ত্বেও তাঁর কথা শোনেনি সব্যসাচী! তাঁকে উপেক্ষা করেই সেই সময় বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি! তাহলে কি আগাগোড়া পুরোটাই ভুল সিদ্ধান্ত ছিল? এর উত্তরও আপাতত অধরা ৷
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন সব্যসাচী। এর পিছনে নানা মুনির নানা মত রয়েছে। কেউ কেউ এর পিছনে তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক সুজিত বসুর সম্পর্ককে কাঠগড়ায় তোলেন। তৃণমূল ছাড়ার পর নানা ইস্যুতে সব্যসাচী যেরকম আক্রমণাত্মকভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও তাঁর দলের সমালোচনা করতেন, সেই স্মৃতি এখনও টাটকা ৷ কিন্তু গত কয়েক দিনে ছবিটা অনেকটাই বদলে যায় ৷ বুধবারই লখিমপুর খেরির ঘটনায় অভিযুক্তদের সমালোচনায় সরব হন সব্যসাচী। তখনই নানা মহলে কানাঘুষো শুরু হয়, তবে বিজেপি ছাড়তে চলেছেন তিনি? ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সেই জল্পনা সত্যি প্রমাণ করে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিলেন সব্যসাচী দত্ত।