কলকাতা ব্যুরো: রিহা চক্রবর্তীর পর সুশান্ত সিং রাজপুতের রহস্যমৃত্যুতে এবার অভিনেত্রীর বাবা-মাকে জেরা করল সিবিআই। মঙ্গলবার ডিআরডিও অফিসে সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের সামনে বসতে হয় ইন্দ্রজিৎ ও সন্ধ্যা চক্রবর্তীকে। এর আগে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেকটরেট একবার রিহার বাবা মাকে আর্থিক তছরুপের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। সূত্রের খবর, বুধবার আবার রিহার বাবা মাকে ডেকেছে সিবিআই।
এতদিন ধরে সিবিআই, ইডি সহ বিভিন্ন এজেন্সির জেরা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচিত হতে হতে এবার রেহা পাল্টা মামলার হুমকি দিলেন। তার আইনজীবী এদিন দাবি করেছেন, সুশান্ত সিং এর পরিবার সম্পূর্ণ জেনেশুনে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থা এবং সুপ্রিমকোর্টকে। আইনজীবীর অভিযোগ, অভিনেতা যে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন এবং তিনি যে ওষুধ খেতেন, সে ব্যাপারে জানা ছিল তার বোনেদের। এমনকি নিজেদের কথার প্রমাণ হিসেবে সুশান্ত সিং এর বোন প্রিয়াংকার সঙ্গে একটি মোবাইল চ্যাটের সূত্র তুলে দেওয়া হয়েছে মিডিয়ার সামনে। ফলে এই ইস্যুতে রিহা চক্রবর্তী সুশান্ত সিং এর পরিবারকে নতুন করে আইনি জালে জড়াতে পারে কিনা সেটা দেখতে আর দু-এক দিন অপেক্ষা করতে হবে।
এদিকে অভিনেতার রহস্য মৃত্যু তদন্ত করতে গিয়ে উল্টে মুম্বাইয়ে ড্রাগ নিয়ে বড়োসড়ো কোন নতুন ঘটনা উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল। তাদের কথায় কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে বেরিয়ে পড়তে পারে।
মুম্বাইয়ের ফিল্ম জগত এবং বাণিজ্য নগরীতে একটা অংশের মধ্যে মাদকের চক্র বেশ প্রভাব বিস্তার করেছে বলে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য ছিল। সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যু মামলার তদন্ত করতে গিয়ে রিহা চক্রবর্তীর মোবাইলের সূত্রে যে মাদক লিংক উঠে এসেছে তার তদন্ত করছে নারকটিক কন্ট্রোল ব্যুরো।
এন সি বি র ডিরেক্টর রাকেশ অস্থানা এখন মুম্বাইয়ের এসেছেন। মনে করা হচ্ছে, এই তদন্তে অনেক বড় বড় রাঘব বোয়াল জড়িয়ে পড়েছে। এনসিবি অধিকর্তা সেই সূত্রেই তদন্তকারীদের পরামর্শ দিতে সামনাসামনি বৈঠক করতে মুম্বাই এসেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
একটি সর্বভারতীয় নিউজ চ্যানেলের দাবি অনুযায়ী, মাদক মামলায় প্রাথমিক তদন্ত করতে গিয়ে বেশ কয়ে কজন প্রভাবশালীর নাম ইতিমধ্যেই উঠে এসেছে। এরমধ্যে যেমন ফিল্ম জগতে লোকজন রয়েছে, তেমন রাজনীতিকদের জড়িয়ে থাকার আশঙ্কা রয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে। ফলে এতদিন মুম্বাইয়ের ফিল্ম জগত কে কেন্দ্র করে যে তোলাবাজি সহ অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ শোনা যেত, সেই তালিকায় এবার মাদকচক্র যোগ আরো প্রকট ভাবে সামনে আসতে পারে।
মুম্বাইয়ের ফিল্মি জগত এবং অপরাধ জগত সম্পর্কে অভিজ্ঞ এক সাংবাদিকের বক্তব্য অনুযায়ী, মাদক নিয়ে যে সূত্র পাওয়া গিয়েছে তা একেবারেই হিমশৈলের চূড়া মাত্র। এখানে রিহা খুব একটা কোন ফ্যাক্টর নয়, তুলনায় গৌরব আরিয়ার বেশ কিছু বক্তব্য তদন্তকারীদের হাত শক্ত করতে পারে বলে মনে করছেন ওই সাংবাদিক। তার মতে, বাণিজ্য নগরীতে তোলা বাজি, অপহরণের মতো অপরাধ ছিলই। তার সঙ্গেই মাদক চক্রও চলছে। কিন্তু বাণিজ্য নগরীর প্রভাবশালীদের এবং অপরাধীদের একটা অংশের এতটাই শক্তি যে এতদিন ওই চোখের দিকে কেউই সে ভাবে তাকায় নি।