কলকাতা ব্যুরো: মঙ্গলবার বিকেলের পরে প্রশাসনের সাজসাজ রব যেন আরো বেশি সিরিয়াস জায়গায় পৌঁছেছে নবান্নে। কারণ দুপুরের পরেই নবান্নের কন্ট্রোল রুমে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সারা রাত নবান্নে থেকে ঝড়ে নজরদারি চালাবেন বলে সবাই জেনে গিয়েছেন। যদিও চমকের তখনো বাকি ছিল। রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যান নবান্নে। সেখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর নবান্নের কন্ট্রোল রুম থেকে ঘূর্ণিঝড় সামাল দেওয়ার জন্য কি রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে ব্যাপারে যাবতীয় খোঁজখবর নেন। তিনি বেশ কিছুক্ষণ সেখানে কাটিয়ে পরে রাজ্যপাল ফিরে যান রাজভবনে।
এরইমধ্যে রাজ্য সরকার জানিয়ে দিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব থাকবে এমন জেলাগুলো থেকে প্রায় নয় লক্ষ মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে। যদিও তার পরেও বহু মানুষ এখনো নদীর ধারে ভিটেমাটি আগলে বসে রয়েছেন বাড়িতেই। নদীর জল ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তু এই মানুষগুলো ভিটে ছেড়ে যেতে নারাজ। সন্দেশখালির গ্রামে গিয়ে দেখা গেল নদীর ধারে দাঁড়িয়ে জলোচ্ছ্বাস কতটা বাড়লো তা দেখে নিচ্ছেন কয়েকজন গ্রামবাসী। একইসঙ্গে যে নৌকা নিয়ে তারা মাছ ধরতে যান, সেটিকে পাড়ের কাছে এনে বেঁধে রেখেছেন, কোনক্রমে যাতে প্রবল জলোচ্ছাসে সেটি ভেসে না যায় টা নিশ্চিত করতে নেমেছেন কেউ কেউ।
যদিও কুলতলী বা পাথরপ্রতিমা এমন বহু গ্রাম আছে, যেখান থেকে অধিকাংশ মানুষকে প্রশাসন নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিলেও বাসিন্দারা একজন বা দুইজন করে বাড়ি আগলে পড়ে রয়েছেন। তাদের কথায়, বছর বছর এমন ঝড় আসে আর তার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকায়। কিন্তু বাড়িঘর, ছেড়ে গবাদিপশুকে ফেলে রেখে দিয়ে চলে গেলে তা একদিকে যেমন নিরাপত্তার কারণে সমস্যার, অন্যদিকে অমঙ্গল। তাই বাড়ি ছেড়ে সবাই মিলে চলে যাওয়ায় এখনো ঘোর আপত্তি এমন বিধ্বংসী প্রকৃতির সামনে মানুষ গুলোর।