কলকাতা ব্যুরো: আইন মেনে তল্লাশি চালানো হয়নি আনিস খানের বাড়িতে। মঙ্গলবার হাইকোর্টে রাজ্যের তরফে এমনটাই জানালেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনাও করেন তিনি। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের শাস্তির প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করা হয়েছে রাজ্যের তরফে। পাশাপাশি সিটের তদন্তে আস্থা রাখার কথাও বলেন এজি।
মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে আনিস খান মৃত্যু মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনাকেল জানান, আত্মহত্যা করেননি ছাত্রনেতা আনিস খান। খুনও করা হয়নি তাঁকে। এজির বক্তব্য অনুযায়ী, খুনের জন্য পুলিশের কোনও মোটিভ নেই। এমনকী আনিসকে ব্যক্তিগতভাবে কেউ চিনতেনও না। তাঁর কথায়, আনিসের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় একটি মামলা ছিল। হিজাব সংক্রান্ত পোস্ট নিয়েও একটি জটিলতা ছিল। ঘটনার দিন আনিসকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল পুলিশ। সম্ভবত সেই সময় পালানোর চেষ্টা করেন আনিস। আনিস খান মামলায় পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ৭ জুন।
তবে এদিন হাইকোর্টে এজি জানিয়েছেন, তল্লাশির ক্ষেত্রে পুলিশকে যা নিয়ম মানতে হয়, এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। ফলে ওই তল্লাশির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত পুলিশ কর্মীদের শাস্তির কথাও বলেছেন তিনি। এই ঘটনার জন্য অ্যাডিশনাল এসপিকে প্রশ্নের মুখেও পড়তে হবে বলেই আদালতে বলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল।
CFSL রিপোর্ট অনুযায়ী, আনিস খান আত্মহত্যা করেননি। হয় কেউ তাঁকে ঠেলে দিয়েছে অথবা কোনওভাবে তিনি পড়ে গিয়েছেন। তবে ছাদ থেকে পড়ে গিয়েই যে আনিসের মৃত্যু হয়েছে, এ কথা স্পষ্ট হয়েছে ফরেন্সিকের রিপোর্টে। পলিগ্রাফ টেস্টের প্রয়োজন রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে এদিন। প্রত্যক্ষদর্শী না থাকায় টেকনিক্যাল সাপোর্ট নিতে হবে বলেও জোরাল সওয়াল করেন সরকার পক্ষের আইনজীবী।
রাজ্যের পক্ষ থেকে এদিন আরও জানানো হয়, ছাত্রনেতার ফোন হায়দরাবাদের ফরেন্সিক ল্যাবে গিয়েছে। সেখানে আইনজীবীর সঙ্গে কথোপকথনও পাওয়া গিয়েছে। এক আইনজীবী বলছেন, ”তুমি এবার অ্যারেস্ট হবে।” আনিস খান মামলায় কোন পর্যায়ে তদন্ত হচ্ছে সেটা নিয়ে ভাবিত কলকাতা হাইকোর্ট। এমনটাই জানিয়েছেন বিচারপতি।
উল্লেখ্য, মাস চারেক আগে আমতা থানা এলাকার বাসিন্দা আনিস খানের বাড়িতে হানা দিয়েছিল পুলিশের পোশাক পরা কয়েকজন। তাঁরা বাবাকে গানপয়েন্টে রেখে আনিসের সঙ্গে কথোপকথন চলাকালীন তাঁকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। মৃত্যু হয় আনিস খানের। তারপর থেকেই সুবিচারের দাবিতে উত্তাল রাজ্য। সরব নানা রাজনৈতিক মহল। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে হাজারও প্রশ্ন উঠেছে। পরিকল্পনা মাফিক খুনের অভিযোগ উঠেছিল। পালটা আত্মহত্যার তত্ত্বেও তুলে ধরেছিলেন কেউ কেউ।