কলকাতা ব্যুরো: এবার সংসদে বক্তব্য রাখাকালীন রাহুল গান্ধীর মাইক বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। এইসঙ্গে অধীর চৌধুরীকে সংসদ কক্ষে বলতেই দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করলো কংগ্রেস। এর প্রতিবাদে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করে কংগ্রেস। সোমবার নিজের বক্তব্যে কৃষকদের স্বার্থে একাধিক দাবি তোলেন রাহুল গান্ধী। বলেন, কৃষকদের যাবতীয় প্রাপ্য অধিকার দিতে হবে। কৃষক আন্দোলনে মৃত কৃষকদের অর্থ সাহায্য ও কর্মসংস্থানেরও দাবি করেন কংগ্রেস নেতা।
রাহুল তথ্য দেন, পাঞ্জাবের কংগ্রেস সরকার ৪০০ কৃষককে অর্থ সাহায্য করেছে। ১৫২ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। যদিও রাহুলের বক্তব্যের মাঝপথেই মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সংসদ কক্ষে সাংসদদের বক্তব্য রাখার জন্য নির্দিষ্ট সময় থাকে। রাহুল সেই সময় নেওয়ার পর অতিরিক্ত সময় চেয়ে বলতে শুরু করেন। সময় চাওয়া সত্ত্বেও বক্তব্যের মাঝখানে কংগ্রেস নেতার মাইকটি বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। এছাড়াও অধীর চৌধুরীকে বলতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছে কংগ্রেস নেতৃ্ত্ব। এরপরেই প্রতিবাদে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করে কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, সংসদে কৃষক মৃত্যু নিয়ে কেন্দ্রের কাছে কী তথ্য আছে? মৃত কৃষকদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে কিনা, কিছুদিন আগেই সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেস-তৃণমূল-সহ অন্য বিরোধী দলের সাংসদেরা। তারই উত্তরে সেদিন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আন্দোলনরত কৃষকদের মৃত্যু হয়েছে, এমন তথ্য নেই কৃষিমন্ত্রকের কাছে। ফলে কোনওরকম অনুদানেরও প্রশ্নও ওঠে না। এদিন এই প্রসঙ্গ তুলে কেন্দ্রকে কটাক্ষ করেন রাহুল গান্ধী।
রাহুল বলেন, প্রায় ৭০০ জন কৃষক মারা গিয়েছেন তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার দাবির আন্দোলনে। আইন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণার সময় প্রধানমন্ত্রী দেশবাসী ও কৃষকদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন। অর্থাৎ ভুল স্বীকার করেছেন তিনি। অথচ কৃষি মন্ত্রী জানালেন, তাঁর কাছে কৃষক মৃত্যুর তথ্যই নেই।
পাশাপাশি সংসদের ভিতরে ও বাইরে কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী বিক্ষোভে সরব বিরোধীরা ৷ একদিকে, ১২ সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ এ দিনও সংসদের বাইরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ জানান ৷ অন্যদিকে, প্রথমে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী, পরে তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন ৷ মঙ্গলবার বিক্ষোভরত সাংসদদের সঙ্গে যোগ দেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
এছাড়াও এদিন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে সরব হন ৷ যে ভাবে কেন্দ্র রাজ্যের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা ছাড়া বিএসএফ-এর ক্ষমতা বৃদ্ধি ঘটিয়েছে, তা একটি রাজ্যের সার্বভৌম অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে অভিযোগ তোলেন সুদীপ ৷ অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা উচিত বলেও তিনি দাবি করেন ৷ তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য, কোনও গণতান্ত্রিক দেশে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না ৷ কেন্দ্রীয় সরকার গণতন্ত্রকে কোনও তোয়াক্কা করেছে না বলে সরব হয় তৃণমূল ৷
পূর্ব ঘোষণা মতোই ১২ সাসপেন্ড সাংসদ এ দিনও গান্ধি মূর্তির সামনে প্রতিবাদ জানান ৷ তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন অভিযোগ করেন, ক্রমে ক্রমে গণতন্ত্রকে নষ্ট করছে কেন্দ্র-বিজেপি ৷ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই তা বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে ৷ দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷ এ ভাবে সাংসদদের সাসপেন্ড করা, কোনও গণতান্ত্রিক দেশেই দেখা যায় না ৷