কলকাতা ব্যুরো: আগামীকাল অর্থাৎ শনিবার থেকে রাজ্যে শুরু হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। চলবে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত। করোনা পরিস্থিতি কাটতে না কাটতেই মাধ্যমিকের পর এবার উচ্চমাধ্যমিকও হচ্ছে অফলাইনে ৷ তবে পরীক্ষা হবে হোম সেন্টারেই। নিজেদের স্কুলেই পরীক্ষা দেবে পরীক্ষার্থীরা। কিন্তু যে কোনওরকম সমস্যা বা অনৈতিক ঘটনা এড়াতে একগুচ্ছ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার তিনগুণ বেশি পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। মোট পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ৯৯৮টি এবং মোট ভেনুর সংখ্যা ৬৭২৭টি। পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, এবছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭.৪৫ লক্ষ। পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ১০টা থেকে, চলবে বেলা ১টা ১৫ পর্যন্ত। উচ্চমাধ্যমিকের পাশাপাশি দ্বিতীয়ভাগে হবে একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা। তাই একদিকে হোম সেন্টারে উচ্চমাধ্যমিক ও অন্যদিকে একাদশের বার্ষিক পরীক্ষা, এই দুটি পরীক্ষাকে সুষ্ঠুভাবে চালানো বেশ চ্যালেঞ্জিং স্কুলগুলির পক্ষে।
তাই শুক্রবার থেকেই রাজ্যের প্রতিটি স্কুলে শুরু হয়ে গেছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি পর্ব। ইতিমধ্যেই স্কুলগুলিতে এসে গিয়েছে টপশিট ও উত্তরপত্র। এবার সেগুলিকে ঠিকমতো নাম্বারিং করে সিরিয়াল অনুসারে সাজানোর কাজ চলছে। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সংসদের তরফে পরীক্ষার্থীদের বসানোর বিশেষ ব্যবস্থার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেই অনুযায়িই নাম্বারিং করা হচ্ছে প্রত্যেকটি বেঞ্চে।
যেহেতু এবার নিজেদের স্কুলেই পরীক্ষা তাই এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে গত দু’বছর পরীক্ষা না হওয়ায় এই বছর পরীক্ষা হওয়াতে পরীক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস ও নির্ভরতার ফিরে পাবে বলেই মত স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের। পাশাপাশি সংসদের তরফে যে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে আমরা সেগুলিকে মাথায় রেখেই পুরো প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এস প্যাটার্নে পরীক্ষার্থীদের বসানোর কথা বলা হয়েছে। সেইভাবেই প্রতিটি ডেস্ক নাম্বারিং করা হচ্ছে। স্ট্রংরুমের বাইরেও পোস্টার লাগানো হয়েছে। তাছাড়া স্কুলের চারপাশে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে ও কড়া পুলিশি প্রহরা থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
পাশাপাশি ক্লাসগুলিকে স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও বাড়তি মাস্ক রাখা হয়েছে। তবে ছাত্র-ছাত্রীদের বারবার বারন করা হয়েছে তারা যেন কোনওভাবেই মোবাইল নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ না করে ৷ এরপরেও যদি পরীক্ষা চলাকালীন কোনও পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে মোবাইল পাওয়া যায় তাহলে সেক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ করবে স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রতিটি কক্ষে যেখানে পরীক্ষা চলবে সেখানে স্কুলের তরফে কমপক্ষে তিনজন করে গার্ড দেওয়ার জন্য থাকবেন। এছাড়াও পরীক্ষার্থীরা যখন পরীক্ষা দিতে ঢুকবে তখন গেটেই তাদের মৌখিকভাবে চেকিং করা হবে।
এছাড়া সংসদের তরফে নেওয়া হয়েছে বিশেষ সতর্কতা। শান্তিপূর্ণ পরীক্ষা আয়োজন করার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে স্পেশাল সুপারভাইজার ও কাউন্সিল নমিনি। প্রতিটি পরীক্ষা হলে দু’জন ইনভিজিলেটরের মধ্যে একজন হবেন মোবাইল ইনভিজিলেটর এবং দ্বিতীয়জন অন্যান্য কাজগুলি করবেন। স্পর্শকাতর ও অতি স্পর্শকাতর পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে থাকছে সিসিটিভি নজরদারি।