কলকাতা ব্যুরো: ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রীর ঝুলন্ত দেহ। মৃত অভিনেত্রীর নাম পল্লবী দে। একটি জনপ্রিয় বাংলা চ্যানেলের ‘মন মানে না’ ধারাবাহিকে গৌরীর ভূমিকায় অভিনয় করতেন তিনি। রবিবার সকালেই পল্লবীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। গড়ফার গাঙ্গুলিপুকুর এলাকার বহুতলে থাকতেন পল্লবী। এদিন সকালে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় বলে খবর।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে বিছানার চাদরের সাহায্যে গলায় ফাঁস লাগিয়েছিলেন পল্লবী। তবে ঘটনাস্থল থেকে কোনও রকম সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি। পল্লবীর শরীরেও কোনও আঘাতের দাগ দেখা যায়নি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখে এক যুবক পল্লবীকে কোলে নিয়ে বসেছিলেন। অভিনেত্রীর তখন জ্ঞান ছিল না। তাঁর গলায় ফাঁসের দাগ স্পষ্ট। তদন্তে জানা গিয়েছে, সেই যুবকের নাম সাগ্নিক চক্রবর্তী। পল্লবীর প্রেমিক তিনি। দেড় বছর ধরে তাঁরা একত্রবাস করছিলেন।

জানা যায়, গত রাত থেকেই বিবাদ চলছিল সাগ্নিক এবং পল্লবীর মধ্যে। রবিবার সকালেও থামেনি ঝামেলা। সকাল সাড়ে ন’টার দিকে সিগারেট খাওয়ার জন্য ঘরের বাইরে যান সাগ্নিক। পল্লবী তখন ছিলেন শোওয়ার ঘরেই। সাগ্নিক ফিরে এসে দেখেন ঘরের দরজা বন্ধ। এর পরেই ঘট অঘটন। এর পর ধাক্কা মেরে দরজা খুলে পল্লবীর দেহ নামান তিনি। পল্লবীর দেহ উদ্ধার করে এম আর বাঙুরে পাঠানো হয়। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা হয়।

জানা গিয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে বাংলা টেলিভিশনে কাজ করছেন পল্লবী। ‘আমি সিরাজের বেগম’ সিরিয়ালে শন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপরীতে ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে স্টার জলসা চ্যানেলে শুরু হয়েছিল ধারাবাহিকটি। ২০১৯ সালে মে মাসে শেষ হয়ে যায়। এরপর ‘রেশম ঝাঁপি’, ‘কুঞ্জছায়া’, ‘সরস্বতীর প্রেমে’র মতো সিরিয়ালে দেখা যায় পল্লবীকে।

শোনা গিয়েছে, গড়ফার ওই বহুতলের ফ্ল্যাটে প্রেমিকের সঙ্গে থাকতেন পল্লবী। লিভ-ইন রিলেশনশিপে ছিলেন তাঁরা। ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা নথিভূক্ত হয়েছে। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে গড়ফা থানার পুলিশ। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই বাংলা টেলিভিশনে কাজ করছিলেন পল্লবী। তাঁর জনপ্রিয়তাও ছিল। তারপরও কীভাবে এই অস্বাভাবিক মৃত্যু? তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, গড়ফার এই ফ্ল্যাটে গত ২৪ এপ্রিল ভাড়া এসেছিলেন পল্লবী। নতুন ফ্ল্যাটে ভাড়া আসার এক মাসের মধ্যেই এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ঘটনাস্থল থেকে কোনও রকম সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে, ঠিক কী কারণে অভিনেত্রীর মৃত্যু তা জানা যাবে। তাঁর অকাল প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ মহলে।

এদিকে রবিবার সকাল থেকেই শুটিং করছিলেন। আচমকা পল্লবীর মৃত্যুর খবর পেয়েই ফ্ল্যাটের সামনে চলে আসেন সায়ক, ভাবনার মতো অভিনেতারা। পল্লবীর মতো একজন প্রাণবন্ত মেয়ের এভাবে মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই কি বাংলা টেলিভিশনের অভিনেত্রীর আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন? আপাতত এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version