কলকাতা ব্যুরো: কলকাতা পারলেও, দিল্লি পারলো না। এ রাজ্যে হাইকোর্টের নির্দেশে নিষিদ্ধ হয়েছিল বাজি। আর জাতীয় পরিবেশ আদালত ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দিল্লি সহ দেশের অন্যত্র গিয়েছিল একই নির্দেশ। কালীপুজোর রাতে সেই নির্দেশ পালন করতে তৎপরতার দেখালো এ রাজ্যের পুলিশ। একই সঙ্গে নাগরিকদের একাংশের সচেতনতায় সেভাবে বাজি জ্বললো না। ফলে বাতাসে দূষণের মাত্রাও আটকে থাকলো স্বাভাবিকের মধ্যে।
এর পাল্টা ছবি দিল্লির। কালীপুজোর রাতে দশটা বাজার পরেই দিল্লিতে বাতাসে দূষণের পরিমাণ বেড়ে গেল কয়েক গুণ বিপদজনক মাত্রায়। যত্রতত্র জ্বলে উঠলো বাজি। বাজি নিষিদ্ধ করার নির্দেশ কার্যকর করতে দিল্লি হেরে গেল। কিন্তু সেই একই নির্দেশ পালন করল বাংলা।
কলকাতায় পরিবেশ দপ্তরের যেসব বায়ু দূষণ মাপার যন্ত্র চতুর্দিকে ছড়ানো রয়েছে, তাতে রাত দশটা পর্যন্ত যা হিসেব, তাতে বিপদের যেমন আশঙ্কা তৈরি হতে পারেনি, সামগ্রিকভাবে শহরে বিপদের অসংখ্য তৈরি হতে পারেনি। রাত দশটায় রবীন্দ্র সরোবরে ১৫৮, যাদবপুরে ২৫৪, বিধাননগরে ১৩০, ফোট উইলিয়াম চত্বরে ১৪৪, রবীন্দ্রভারতী চত্বরে ৩৫২। আর এর উল্টো দিকে দিল্লিতে সন্ধ্যা তেই বায়ু দূষণের মাত্রা ছিল ৪৫০ থেকে ৫০০র কাছাকাছি। করোনা আবহে যা আবার মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলতে পারে দিল্লিতে।
বর্ষিয়ান পুলিশ অফিসার থেকে পরিবেশ কর্মীরা মানছেন, হাইকোর্টের নির্দেশ থাকায় এবার পুলিশের ক্ষেত্রে কড়া হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হয়েছে। যদিও এনজিটির নির্দেশ হাতে থাকা সত্ত্বেও, দিল্লিতে সেই সচেতনতা মানুষের মধ্যেও দেখা যায়নি। এমনিতেই দিল্লিতে বাতাসে ভয়াবহ দূষণ। সেই কারণেই কালীপূজায় বাজি নিষিদ্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছিল এন জি টি।
কলকাতায় অবশ্য পুলিশ তৎপরতা শুরু করেছিল হাইকোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পরেই। মূলত বিভিন্ন থানা এলাকায় আবাসনগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। যেগুলিতে অন্যান্য বছরে বাজি বিপজ্জনকভাবে জ্বালানো হয়। সেইগুলোকে তারপরে সেখানেই আবাসন গুলির কর্মকর্তাদের ডেকে হাইকোর্টের নির্দেশ উল্লেখ করে নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতেই থেমে থাকেনি পুলিশ।
শনিবার বিকেল থেকে সাইকেল, অটোরিকশা, এমনকি বাইকে করে পুলিশকর্মীরা পাড়ায় পাড়ায়, গলিতে ঢুকে পড়েছেন, বাজি জ্বালানো হচ্ছে কিনা তার খোঁজ করতে। এমনকি বহু আবাসনের ছাদের উপরে পুলিশকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওড়ানো হয় ড্রোন। ফলে একদিকে নাগরিকদের একাংশের সচেতনতার সঙ্গেই পুলিশের সক্রিয়তায় এ যাত্রায় মান বাঁচলো কলকাতার।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version