কলকাতা ব্যুরো: দীর্ঘ প্রায় ৩৩ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে প্রাণ হারালেন মুম্বই ধর্ষণকাণ্ডের নির্যাতিতা। ঘাটকোপারের রাজাওয়াড়ি হাসপাতালে তাঁর চিকিত্সা চলছিল। সেখানেই শনিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হল। নির্যাতিতাকে বাঁচাতে একটি সার্জারি করা হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসকরা জানান, নির্যাতিতার শরীরে এত বেশি ক্ষত ছিল যে তা থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল বাকি শরীরে। প্রচুর রক্তক্ষরণও হয়েছিল তাঁর। এর জেরে তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

প্রসঙ্গত, অন্ধেরি পূর্বের সাকিনাকা এলাকার খায়রানি রোডের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা এক টেম্পোর মধ্যে থেকে মহিলাকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ৩২ বছরের ওই মহিলাকে ধর্ষণ ও নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠে। চিকিৎসকদের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ওই মহিলার সঙ্গে পাশবিক অত্যাচার করা হয়। জানা যায়, ধর্ষণের পর নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে লোহার রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই দিল্লির নির্ভয়াকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা হয় এই ঘটনার।

শুক্রবার ভোররাতে নির্যাতিতা মহিলার বিষয়ে জানাতে প্রথমবার মুম্বই পুলিশের কন্ট্রোলরুমে ফোন আসে। খবর পেয়ে মহিলাকে উদ্ধআর করেছিল পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ ইতিমধ্যেই এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কিনা সে বিষয়ে খতিয়ে দেখতে জিজ্ঞাসাবাদ জারি রেখেছে পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ এবং ৩০৭ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।

ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত মোহিত চৌহানকে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ। ধৃত মোহিত চৌহানের (৪৫) বিরুদ্ধে খুন এবং ধর্ষণের (ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ও ৩৭৬) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বর্তমানে ধৃত সাকিনাকা থানায় রয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই ঘটনা ঘটিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। কুরলা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ধৃতকে চরম শাস্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন। সাকি নাকা কাণ্ডে দ্রুত চার্জশিট গঠন করার আশ্বাস দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মাও বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করার কথা বলেছেন। এদিকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেও গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মহারাষ্ট্রের বিরোধি দলনেতা দেবেন্দ্র ফড়নবীশ জানিয়েছেন, তিনি ওই ঘটনায় স্তম্ভিত।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version