কলকাতা ব্যুরো: চলে গেলেন বাংলার রাজনীতির বর্ণময় চরিত্র সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দীপাবলীর সন্ধ্যায় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেন। কিন্তু তার রাজনৈতিক জীবনের অন্যতম সহযোগী সুব্রত মুখোপাধ্যায় মৃতদেহ দেখার তাঁর ক্ষমতা নেই জানিয়ে তিনি হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান। বৃহস্পতিবার রাত ৯ টা ২২ এ তিনি মারা যান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থ সুব্রত গত দুদিন একটু ভালোই ছিলেন। এদিন সন্ধ্যায় তিনি শৌচালয় যান। সেখান থেকে ফিরেই হার্ট অ্যাটাক হয়। বহু চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো যায়নি।
দীপাবলীর সন্ধ্যায় যখন আলোয় আলোকিত শহর, তখন আঁধার নেমে এলো মুখোপাধ্যায় পরিবারে। কলকাতার ৩৬ তম মেয়র, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার দীর্ঘদিনের ক্যাবিনেট মিনিস্টার সুব্রত। তিনিই একমাত্র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যিনি মমতার মন্ত্রিসভায় ছিলেন, যিনি সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের মন্ত্রিসভার সবচেয়ে তরুণ মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছিলেন। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক এবং বাংলার রাজনীতিতে বহু ভাঙা-গড়ার সাক্ষী সুব্রত। তাঁর মৃত্যুতে একটা অধ্যায় শেষ হলো বলে মনে করছেন রাজনীতিকরা।
শুধু রাজনীতিক হিসেবেই নয়, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছিলেন অরাজনৈতিকদের কাছেও যথেষ্টই কাছের মানুষ। মন্ত্রী হিসেবে, প্রভাবশালী হিসেবে তার কোনদিন দূরত্ব তৈরি হয়নি আমজনতার সঙ্গে। দল মত নির্বিশেষে তিনি ছিলেন সকলের সুব্রত দা। কংগ্রেস আমলের শেষদিকে বাংলার রাজনীতিতে প্রিয়-সুব্রত জুটি ছিল তরুণ তুর্কিদের সামনে হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালার মতো। কয়েক বছর আগে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি চলে গিয়েছেন। আজ চলে গেলেন সুব্রত মুখার্জিও।
জানা গিয়েছে, বর্ষীয়ান নেতার মরদেহ এদিন রাখা থাকবে SSKM-এর কার্ডিওলজি বিভাগে। শুক্রবার সকালে সেখান থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে পিস ওয়ার্ল্ডে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে রবীন্দ্র সদনে। সেখানেই শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন সকলে। তারপর মরদেহ যাবে বাড়িতে। এরপর তাঁর দেহ থাকবে নিজের প্রিয় ক্লাব একডালিয়া এভারগ্রিনে। এরপর হবে শেষকৃত্য।