কলকাতা ব্যুরো: উল্টে গেলো আলিমুদ্দিনের সমস্ত হিসেবনিকেশ। রাজ্য সম্মেলন শেষ হতে না হতেই পরবর্তী রাজ্য সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে দিল সিপিএম। সূর্যকান্ত মিশ্রর যুগের অবসানের পর নতুন রাজ্য সম্পাদক হলেন পলিটব্যুরো সদস্য তথা প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিম। যদিও এই দৌড়ে শ্রীদীপ ভট্টাচার্যর নাম ঘোরাফেরা করছিলো। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সব জল্পনার অবসান ঘটলো। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর মতামত এবং প্রভাব এক্ষেত্রে ভালভাবে কাজ করেছে। এছাড়া দলের নয়া নিয়ম মেনে বয়স্করা বাদ পড়লেন রাজ্য কমিটি থেকে। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র সহ মোট ১২ জন বাদ পড়েছেন বলে খবর।
তিনদিনের রাজ্য সম্মেলনের শেষদিন নতুন রাজ্য সম্পাদক ঘোষণার অপেক্ষাতেই ছিলেন সকলে। তবে দিনের শেষে রাজ্য সম্পাদকের পদে নির্বাচিত হলেন মহম্মদ সেলিমই। দল ভাগের পর এই প্রথম রাজ্য সম্পাদক হলেন কোনও সংখ্যালঘু ব্যক্তি। যা বামপন্থী ইতিহাসের নতুন অধ্যায়। ব্যাপক রদবদল হয়েছে সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে। প্রবীণ রাজনীতিকরা প্রায় সকলেই বাদ পড়েছেন। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রর পাশাপাশি নতুন রাজ্য কমিটিতে ঠাঁই হয়নি নেপালদেব ভট্টাচার্য, মৃদুল দে, মিনতি ঘোষ, গৌতম দেবদের। রাজ্য কমিটিতে জায়গা পাচ্ছেন সুদীপ সেনগুপ্ত, তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়, আত্রেয়ী গুহও।
অন্যদিকে, গড়বেতার দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের বর্তমান জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ এলেন রাজ্য কমিটিতে। সদস্য হয়েছেন আসানসোলের সিপিএম প্রার্থী পার্থ মুখোপাধ্যায়। এছাড়া DYFI-SFI নেতৃত্বের কয়েকজনকে রাজ্য কমিটির স্থায়ী সদস্য হিসেবে আনা হয়েছে। DYFI রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়, সৃজন ভট্টাচার্য, ময়ূখ বিশ্বাস আমন্ত্রিত সদস্য ছিলেন, এবার স্থায়ীভাবে ঢুকে গেলেন রাজ্য কমিটিতে। বঙ্গ সিপিএমের সংগঠনে এত রদবদল নিঃসন্দেহে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
বরাবরই Age Factor-এ বিদ্ধ হয়েছে বামেরা। পার্টিতে অধিকাংশ সাদা চুল আর ধুতি-পঞ্জাবীর নেতাকে আর দেখতে চাইছে না মানুষ। চাই তরুণ মুখ। এই প্রসঙ্গ বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে সমর্থকদের মধ্যে। এখন অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হচ্ছেন বামেদের তরুণ প্রজন্মের নেতারা। সে ক্ষেত্রে নতুন এই রাজ্য কমিটি দলকে ঘুরে দাঁড়াতে কতটা সদর্থক ভূমিকা নেবে, সেটাই এখন দেখার।