কলকাতা ব্যুরো: সব্জির বাজারে সত্যি সত্যিই যেন আগুন লেগেছে। আলু ৩৫, পেঁয়াজ ৯০, পটল, ভেন্ডি, ঝিঙে কোনোটাই ৬০ টাকার কম নয়। বেগুন, উচ্ছে ৭০, টমেটো ৮০ টাকা কেজি। কাঁচা লঙ্কা ২০০ টাকা কেজি। ছোট সাইজের ফুলকপিও ৩০ টাকা পিস। অথচ নতুন সব্জি ওঠার সময় হয়ে এলো। সব্জির ঘাটতি নেই বাজারেও। এবারের বৃষ্টিতে মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশের পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে বটে। রাজস্থানের পেঁয়াজ শেষ। এখন ভরসা মহারাষ্ট্রের নাসিকের পেঁয়াজ। কিন্তু এখনো সেখানে যথেষ্ট পরিমানেই পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতেই বাজারে চলে আসবে নতুন পেঁয়াজ। মহারাষ্ট্রের থেকে ৮০-৮২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ কিনেছে নাবার্ড। রাজ্যের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কিন্তু সেই পেঁয়াজ দেওয়া হচ্ছে দিল্লি, বিহার এবং হরিয়ানাতে। বাংলাকে তা দেওয়া হচ্ছে না।

দেখা যাক, আলুর পরিস্থিতি। রাজ্যের হিমঘরগুলিতে এখনো মজুত রয়েছে ১২ লাখ মেট্রিক টন আলু। অথচ ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের লাগবে বড়জোর ৬ লাখ মেট্রিক টন আলু। যা প্রয়োজনের থেকে অনেক বেশি। ইতিমধ্যে কলকাতায় ঢুকতে শুরু করেছে রাঁচির নতুন আলু। ডিসেম্বরের শুরুর দিকেই উঠতে শুরু করবে রাজ্যের আলুও। স্বভাবিক কারণেই দিন কয়েকের মধ্যেই পুরানো আলু কেউ আর অত দামে কিনবে না বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তখন হিমঘর ফাঁকা করে পুরানো আলু তারা রাস্তায় ঢেলে বিক্রি করতে বাধ্য হবেন বলেই মনে করছেন তারা। সরকার মাস দুয়েক আগেও খুচরো বাজারে আলুর দাম বেঁধে দিলেও, তাতে কোনই কাজ হয়নি। না আছে উপযুক্ত আইন, না আছে বাজারের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ কিংবা উপযুক্ত পদক্ষেপ। যার ফলে সবই রয়ে গিয়েছে কথার কথা হিসেবেই।

এখন বাজারে ছোট সাইজের একটা ফুলকপির দামও ৩০ টাকার কম নয়। অথচ পাইকারি বাজারে তার দাম ১০ টাকা। বাজারে আসতে শুরু করেছে ভাঙর এবং মদনপুরের ফুলকপি। দিন কয়েকের মধ্যে তা বাজারে আরো বেশি পরিমাণে আসবে। আসবে রাঁচি থেকেও। তাই তার দামও কমতে বাধ্য বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। একই কথা প্রযোজ্য বাঁধাকপির ক্ষেত্রেও। বৃষ্টির কারণে অন্যান্য শীতকালীন সব্জি আসতে খানিকটা দেরি হলেও তা দিন কয়েকের মধ্যেই উঠতে শুরু করবে।

এখন বাজারে এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির পেছনে পুজোর সময়ে সব্জির জোগান কম থাকা এবং লোকাল ট্রেন না চলাকেই দায়ি করছেন ব্যবসায়ী মহল। তাদের হিসেবেজ ট্রেনে ১ কেজি সব্জি আনতে যেখামে খরচ পরে ৫০ পয়সা, সেখানে গাড়ি ভাড়া করে আনতে খরচ পড়ছে ১০ টাকা। আপাতত লক্ষী পুজো পর্যন্ত বাজারে দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ খুচরো ব্যবসায়ীরা এই পরিস্থিতির সুযোগ নেবেন। তারপর সব্জির দাম কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। আবার ভাই ফোঁটার সময়ে সব্জির দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version