কলকাতা ব্যুরো: উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের শেষ দফার প্রচারে বৃহস্পতিবার বিজেপিকে উৎখাতের ডাক দিতে তিন দশক আগে, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময়ের স্লোগান ফিরিয়ে আনলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বারাণসীতে দাঁড়িয়ে সমাজবাদী পার্টির হয়ে প্রচারে তিনি বলে উঠলেন, ‘এক ধাক্কা অউর দো/ পুরা ইউপি সে ফেক দো’। বহু চর্চিত স্লোগানের পরবর্তী অংশ আজকের সময়ের জন্য অদলবদল করে নিলেন নেত্রী। জলের মতো পরিষ্কার কাকে ধাক্কা দিয়ে ভূপতিত করতে চাইছেন তিনি। বুধবার সন্ধেয় বারাণসীতে পা দেওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এদিনের সভা থেকে তার জবাব দিয়ে মমতা বললেন, বিজেপি হারবে জেনেই আমাকে এখান থেকে ফেরাতে চায়। কিন্তু জেনে রাখুন, আমাকে এভাবে ভয় দেখানো যাবে না। আমি ভীতু নই।

বাংলার বিধানসভা ভোটের তুমুল জনপ্রিয় স্লোগান ‘খেলা হবে’ শোনা গেল তাঁর মুখে। ঠিক এখানকার প্রচারে তিনি যেভাবে ভাষণ শেষে ফুটবল মঞ্চ থেকে ছুঁড়তেন, এখানেও তাঁকে দেখা গেল সেভাবেই। বললেন, বলটা কেউ লুফতে পারলেই অখিলেশ জিতবে। 

এদিন মমতার বক্তব্যের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অংশ ‘বাবরি ভাঙা’র সময় লালকৃষ্ণ আডবাণীর স্লোগানের কিয়দংশ। রথযাত্রা’য় বেরিয়ে তিনি বলেছিলেন, ”এক ধাক্কা অউর দো/ বাবরি মসজিদ তোড় দো”। তারই প্রথম অংশ নিলেন মমতা। ‘এক ধাক্কা অউর দো’ – এই স্লোগান তুলে উত্তরপ্রদেশ থেকে বিজেপি সরকারকে উপড়ে ফেলার হুঙ্কার দিলেন তিনি। স্পষ্টই বললেন, পুরো উত্তরপ্রদেশ থেকে বিজেপিকে উপড়ে ফেলুন। এভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপি নেতাদের স্লোগানে তাদেরই বিদ্ধ করার কৌশল চমকে দিয়েছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। 

এছাড়াও এদিন মমতার মুখে স্বাস্থ্যসাথী, সবুজসাথী, স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের পাশাপাশি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের নামও শোনা গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের নারী নিরাপত্তা নিয়ে বারবার প্রশ্নও উঠেছে। এদিনের সভা থেকে মহিলা ভোটকেই লক্ষ্য করেন মমতা। বলেন, মা বোনরা আমাদের বাড়ির সম্বল, তাঁরা বাড়ির সব কাজ করেন। আপানাদের কাছে আমার অনুরোধ আপনারা অন্য কারোর ওপর ভরসা না করে অখিলেশকে ভোট দিন।

মমতা বলেন, আমি বাংলায় প্রত্যেক মহিলাকে মাসে ৫০০ টাকা করে দি। বিজেপির সরকার মেয়েদের জন্য কী করেছে? কিচ্ছু করেনি। তাই বিজেপিকে ভোট দেবেননা। অন্যদিকে ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের প্রসঙ্গও ওঠে মমতার মুখে। তিনি বলেন, আটকে থাকা ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনা সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু বিমানে উঠে বিজেপির এক মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জয়গান করছে। আমরাও বলেছি, বাংলার কেউ আটকে থাকলে তার বিমান ভাড়া সরকার দেবে।

৭ তারিখ উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের শেষ দফা। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী মোদির কেন্দ্র বারাণসীতে ভোট। তার আগে সমাজবাদী পার্টির হয়ে প্রচার করতে সেখানেই গিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বারাণসীর ঘাটে সেই প্রচারসভা থেকে তাঁর হুঙ্কার, জীবনে প্রচুরবার হামলার মুখে পড়েছি আমি। সামনে থেকে লড়েছি। আমাকে হারানো, ভয় পাওয়ানো এত সহজ নয়।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version