কলকাতা ব্যুরো: গত কয়েক মাসে বিভিন্ন রাজ্যের একাধিক কংগ্রেস নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ একাধিক তৃণমূল নেতাদের গলায় উঠে এসেছে লাগাতার কংগ্রেস বিরোধিতার সুর। এই অবস্থায় আর রাখঢাক না রেখে, সরাসরি তৃণমূলকে আক্রমণের পথে যাওয়ার কথা ভাবছে কংগ্রেস। সূত্রের খবর, বুধবার কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের গোপন বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বুধবার মুম্বইয়ে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বৈঠক শেষে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্মিলিত বিরোধী জোটে কংগ্রেসের উপস্থিতি প্রসঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর কটাক্ষ, বিজেপির বিরুদ্ধে সম্মিলিত মঞ্চ গড়ে লড়তে চায় তৃণমূল-সহ আঞ্চলিক দলগুলি। কিন্তু কেউ যদি লড়তে না চায়, তাহলে কী করা যাবে! মমতা সরাসরি বলেন, ইউপিএ-র কোনও অস্তিত্ব নেই।

উল্লেখ্য, বুধবার মুম্বইয়ে যে দু’টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে তৃণমূলনেত্রী বৈঠক করেন, সেই দু’টি দলই ইউপিএ জোটের অংশ। মমতার ইঙ্গিতে স্পষ্ট, ইউপিএ নয়, বিজেপিকে রুখতে আঞ্চলিক দলের বৃহত্তম ফ্রন্ট বানাতে চান তিনি। মমতার কথায়, সবক’টি রাজনৈতিক দল যদি একজোট হয়ে লড়াই করে তবে বিজেপিকে হারানো সহজ হবে।

২০০৪ থেকে ২০১৪, এই দশ বছর কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট। ইউপিএ ২-এর অংশ ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল। এরপর ক্ষমতায় আসে বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়েছে তৃণমূল। বিপুল জয়ের পর থেকেই সর্বভারতীয় পর্যায়ে তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার পথে নেমেছেন মমতা। এইসঙ্গে প্রকাশ্যে কংগ্রেস বিরোধিতা শুরু করেছেন। সেই সূত্রেই মুম্বই সফরে শিব সেনা নেতা আদিত্য ঠাকরে ও এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা।

এর আগে দিল্লি সফরও করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেখানে বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে দেখা করলেও ইঙ্গিতপূর্ণভাবে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেননি।  এভাবে লাগাতার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কংগ্রেস বিরোধিতার পর বুধবার রাতে গোপন বৈঠকে বসেন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, এবার মমতাকে পাল্টা দেওয়ার কথা ভাবছে কংগ্রেস। সরসরি আক্রমণ করা হতে পারে তৃণমূল ও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যদিও বৃহস্পতিবার সকালে নরম সুর দেখা গেল কংগ্রেস রাজ্যসভার দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের গলায়। তিনি বলেন, আমাদের সকলের উদ্দেশ্য বিজেপিকে হারানো, অতএব নিজেদের মধ্যে বিবাদ করা উচিত নয়।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version