কলকাতা ব্যুরো: জয় যেন প্রত্যাশিতই ছিল! সোমবার শিলিগুড়ি পুর নিগমের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের গণনার শেষে জয় ঘোষণা হতেই “তুমি কেমন করে গান কর হে গুণী/ আমি অবাক হয়ে শুনি” গান ধরলেন তৃণমূল প্রার্থী গৌতম দেব। গানের মাধ্যমে তাঁর জয় দলনেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই উৎসর্গ করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী।

এদিকে মুখ্যমন্ত্রীও ততক্ষণে বাম দুর্গ পতনের ‘নায়ক’ গৌতম দেবকেই শিলিগুড়ির পরবর্তী মেয়র হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তিনি বলেন, গৌতম দেব অনেক সিনিয়র নেতা। তাই শিলিগুড়িতে তাঁকেই মেয়রের দায়িত্ব দেওয়া হবে।

জয়ের পর এদিন বিরোধীদের কটাক্ষ করে গৌতম দেব বলেন, ওরা উই শ্যাল ওভারকাম গান ধরুক। এবারে শিলিগুড়ি পুর নির্বাচনে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী গৌতম দেব তিন হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন। তাঁর বিপরীতে ছিলেন সিপিএম-এর অসীম সাহা এবং বিজেপির পরিমল সূত্রধর। প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে তাঁরা অনেকটাই পিছনের সারিতে। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হলেও পুর নিগম নির্বাচনে জয় পেয়ে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। এই জয় দলনেত্রীকেই উৎসর্গ করে তিনি বলেন, এই বিশাল জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন, তাঁর বারবার উত্তরবঙ্গে আসা এবং উত্তরবঙ্গের মানুষের প্রতি মমত্ব-ভালবাসা থেকেই এসেছে। উত্তরবঙ্গের মানুষ তাঁকে ভালবাসা ফিরিয়ে দিয়েছে। মানুষের এই রায়কে নতমস্তকে গ্রহণ করছি এবং এই জয় দিদিকে অর্ঘ্য হিসাবে নিবেদন করতে চাইছি।

কেবল গৌতম দেবের জয় নয়, শিলিগুড়ি পুরবোর্ড তৃণমূলের দখলেই গেল। এদিকে, তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রশাসনিক কাজে যোগ দিতে এদিনই শিলিগুড়িতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে এই জয় আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন গৌতম দেব। তাঁর কথায়, মুখ্যমন্ত্রীর চরণ ছুঁয়ে এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে বিশেষ তাৎপর্য ও ব্যঞ্জনা আছে। এবারে শিলিগুড়ি পুর নিগমের ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪০টি তৃণমূলের দখলে যাবে বলে ভোটের আগেই দাবি জানিয়েছিলেন পুর প্রশাসক গৌতম দেব।

নিজের জয়ের পর সেই প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ৪৭-এর মধ্যে ৪০টি আমরা পাব, আগেই বলেছিলাম। তবে জয় পেলেও শহরবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি সুষ্ঠুভাবে পুরবোর্ড চালানোর জন্য সমস্ত বিরোধী প্রার্থীদের সঙ্গেও দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন গৌতম দেব।

প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন গৌতম দেব। কিন্তু, ওই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী শিখা চ্যাটার্জীর কাছে পরাজিত হন তিনি। এরপরই শিলিগুড়ি পুর নিগমের প্রশাসকের দায়িত্ব তাঁর হাতে অর্পণ করেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রেক্ষিতে এবারের পুর নিগম নির্বাচনেও তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি।

অবশেষে শেষ হাসি হাসলেন গৌতম দেব। তাই এবার জয় পেয়েই তাঁর বই লেখার অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করবেন বলে জানালেন একাধারে রাজনীতিক, আবৃত্তিকার ও লেখক। তাঁর কথায়, আমার বই লেখার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। আগামী দু’মাসের মধ্যেই বইটির প্রথম পর্ব শেষ করব।

দেখুন শিলিগুড়ি পুরভোটের ফলাফল একনজরে….

ওয়ার্ডজয়ীদ্বিতীয় স্থান
ওয়ার্ড-১তৃণমূলনির্দল
ওয়ার্ড-২তৃণমূলবাম
ওয়ার্ড-৩তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-৪বিজেপিতৃণমূল
ওয়ার্ড-৫তৃণমূলনির্দল
ওয়ার্ড-৬তৃণমূলবাম
ওয়ার্ড-৭তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-৮বিজেপিতৃণমূল
ওয়ার্ড-৯বিজেপিতৃণমূল
ওয়ার্ড-১০তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-১১বিজেপিতৃণমূল
ওয়ার্ড-১২তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-১৩তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-১৪তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-১৫তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-১৬কংগ্রেসতৃণমূল
ওয়ার্ড-১৭তৃণমূলবাম
ওয়ার্ড-১৮তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-১৯বামতৃণমূল
ওয়ার্ড-২০তৃণমূলবাম
ওয়ার্ড-২১তৃণমূলকংগ্রেস
ওয়ার্ড-২২বামতৃণমূল
ওয়ার্ড-২৩তৃণমূলবাম
ওয়ার্ড-২৪তৃণমূলনির্দল
ওয়ার্ড-২৫তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-২৬তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-২৭তৃণমূলবাম
ওয়ার্ড-২৮তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-২৯বামতৃণমূল
ওয়ার্ড-৩০তৃণমূলবাম
ওয়ার্ড-৩১তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-৩২তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-৩৩তৃণমূলনির্দল
ওয়ার্ড-৩৪তৃণমূলবাম
ওয়ার্ড-৩৫তৃণমূলবাম
ওয়ার্ড-৩৬তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-৩৭তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-৩৮তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-৩৯তৃণমূলনির্দল
ওয়ার্ড-৪০তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-৪১তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-৪২তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-৪৩তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-৪৪তৃণমূলবিজেপি
ওয়ার্ড-৪৫বামতৃণমূল
ওয়ার্ড-৪৬তৃণমূলবাম
ওয়ার্ড-৪৭তৃণমূলবাম
Share.
Leave A Reply

Exit mobile version