রাজ্যে নিদারুণ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যেও রাজনীতিতে ব্যস্ত অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। ‘ডুবন্ত’ রাজ্যের প্রতি মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রশাসনের উদাসীনতা নিয়ে আগেই পথে নেমেছিলেন তৃণমূল কর্মীরা। এবার এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে আসরে নামলেন খোদ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে নিশানা করলেন তিনি।
মহারাষ্ট্রের বিদ্রোহী শিব সেনা বিধায়কদের যেভাবে অসমে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা করে অভিষেকের টুইট, অসম যখন ডুবছে, তখন বিজেপি সরকার দিল্লির নির্দেশে বিদ্রোহী বিধায়কদের আপ্যায়ণে ব্যস্ত। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা যদি মহারাষ্ট্র সরকার ফেলার কথা না ভেবে একটু বেশি করে বন্যা দুর্গতদের কথা ভাবতেন, তাহলে হয়তো ভাল হত। অভিষেকের সাফ কথা, দিল্লি থেকে নিয়ন্ত্রিত সরকারের কাছে কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটা স্পষ্ট হয়ে গেল।
বস্তুত, এই মুহূর্তে প্রকৃতির কোপে অসহায় জল-যন্ত্রণা ভোগ করছে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ। অনির্বচনীয় জলকষ্টের শিকার দেশের উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের অধিবাসীরা। জলের তোড়ে ডুবে গিয়েছে ঘরবাড়ি, হারিয়ে গিয়েছে শেষ সম্বলটুকুও। না আছে আশ্রয়, না আছে অন্ন। প্রতি মুহূর্তে অবনতি হচ্ছে অবস্থার। অথচ সাধারণের এই দুর্ভোগ-দুর্দশার দিকে কোনও ভ্রুক্ষেপই নেই রাজ্যের বিজেপি সরকারের। না নেওয়া হচ্ছে বন্যা নিয়ন্ত্রণে কোনও দরকারি পদক্ষেপ, না দুর্গতদের পাশে সক্রিয়ভাবে দাঁড়াচ্ছেন প্রশাসনের কেউ। দেখা যাচ্ছে না রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের কাউকে।
বন্যা দুর্গতদের পাশে না দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ঘুরে বেড়াচ্ছেন উপনির্বাচনের প্রচারে। আবার এই বিপর্যয়ের মধ্যেই মহারাষ্ট্রের বিদ্রোহী শিব সেনা বিধায়কদের অপ্যায়ণে ব্যস্ত বিজেপি নেতারা। যার প্রতিবাদে এদিন সকালেই পথে নেমেছে তৃণমূল। যে হোটেলে শিব সেনা বিধায়কদের রাখা হয়েছে, তার বাইরেই এদিন সকালে বিক্ষোভ দেখান অসমের তৃণমূল কর্মীরা। খোদ দলের রাজ্য সভাপতি রিপুণ বোরা ওই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন। তৃণমূল কর্মীদের সেই বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ দিয়ে কর্মীদের গ্রেপ্তার করিয়েছে অসম সরকার।