কলকাতা ব্যুরো: কাশ্মীরের জঙ্গি নেতা ইয়াসিন মালিককে যাবজ্জীবন জেলের সাজা শোনালো আদালত। পাশাপাশি, বুধবার নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ‘জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টে’র প্রধানকে জঙ্গিদের অর্থসাহায্যের অপরাধে ১০ লক্ষ টাকার জরিমানাও করেছে দিল্লির এনআইএ-র বিশেষ আদালত।
প্রসঙ্গত, মে মাসের ১৯ তারিখ সন্ত্রাসবাদীদের মদত এবং অর্থসাহায্য মামলায় বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিককে দোষী সাব্যস্ত করে দিল্লির বিশেষ এনআইএ আদালত। আদালতে নিজেই জঙ্গিদের মদত দেওয়ার কথা স্বীকার করে নেয় ইয়াসিন মালিক। আর সেই বয়ানের ভিত্তিতেই বিচ্ছিন্নতাবাদী এই নেতাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তারপরই ২৫ মে অর্থাৎ আজ সাজা ঘোষণা করা হয়। এদিন ইয়াসিন মালিককে দু’টি যাবজ্জীবন জেলের সাজা শোনান বিচারক। একইসঙ্গে, আরও ১০টি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় জেকেএলএফ প্রধানকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লক্ষ টাকার জরিমানা করা হয়েছে। তিনটি সাজাই সমান্তরাল ভাবে চলবে বলে জানিয়েছে আদালত।
বহুদিন ধরেই জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্ম চালানোর ও তা প্রচার করার অভিযোগ রয়েছে জম্মু কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের নেতা ইয়াসিন মালিকের বিরুদ্ধে। এই কারণে একাধিকবার গৃহবন্দিও করে রাখা হয় তাকে। এদিকে ইয়াসিনের সংগঠন জম্মু কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টকে আগেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বছর দুই আগেই তাকে জঙ্গিদের মদত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে এনআইএ। তারপর থেকে জেলেই রয়েছে ইয়াসিন।
এদিন জঙ্গিনেতা ইয়াসিন মালিকের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। তারই পালটা দিলেন মালিকের হাতে খুন ভারতীয় বায়ুসেনার আধিকারিক রবি খান্নার স্ত্রী নির্মল খান্না। এদিন মালিকের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে মেহবুবা মুফতি বলেন, ভারতের থেকে পাকিস্তানের বিচারব্যবস্থা ভালো। কাউকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হবে না।
আর মুফতির এমন মন্তব্যের পরই প্রতিবাদে সরব হন মালিকের হাতে খুন ভারতীয় বায়ুসেনার আধিকারিক রবি খান্নার স্ত্রী নির্মল খান্না। তিনি বলেন, মেহবুবার ট্র্যাক রেকর্ড সবার জানা। তিনি এমন কথা কেন বলছেন তা সবাই জানে। আজ থেকে ৩২ বছর আগে আমার স্বামীকে খুন করা হয়েছিল। কিন্তু ইয়াসিন মালিক আজও বেঁচে আছে। আমি সেদিনের কথা কখনও ভুলতে পরি না। ইয়াসিনের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত।
প্রসঙ্গত ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর উপত্যকায় জোর ধরপাকড় শুরু করে ভারতীয় সেনা। তখনই ইয়াসিন মালিক-সহ বেশ কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার জঙ্গিযোগের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। সেসময়ে গ্রেপ্তার হয় ইয়াসিন। এদিকে বুধবার ইয়াসিনের সাজা ঘোষণার পর কাশ্মীর উপত্যকায় অশান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর সেই কারনেই শ্রীনগর-সহ একাধিক এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও।