কলকাতা ব্যুরো: ঘণ্টাকয়েকের চেষ্টায় বন্দি বাঘ। ঘুমপাড়ানি গুলি করে খাঁচাবন্দি করা হলো কোচবিহারের লোকালয়ে চলে আসা চিতাবাঘটিকে। বৃহস্পতিবার সকালে লোকালয়ে চলে আসে সে। তার জেরেই ছড়ায় তীব্র আতঙ্ক। এরপর বনদপ্তরের তৎপরতায় চিতাবাঘটিকে খাঁচাবন্দি করা হয়।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে কোচবিহারের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কলাবাগান এলাকায় চলে আসে ওই চিতাবাঘটি। মোটের উপর ওই এলাকাটি যথেষ্ট ঘনবসতিপূর্ণ। এলাকায় ঘুরতে থাকে চিতাবাঘটি। রাস্তায় কিছুটা ঘোরাফেরার পর হঠাৎ করে এলাকার এক বাসিন্দার বাড়ির শৌচাগারে ঢুকে পড়ে চিতাবাঘটি।
এদিকে লোকালয়ে চিতাবাঘটিকে ঘোরাফেরা করতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলা জানান, সাতসকালে তিনি দেখেন চিতাবাঘটি একটি বাড়ির পিছনে বসে রয়েছে। পরে ওই এলাকায় ঘুরতে থাকে চিতাবাঘটি। গলি দিয়ে ঢুকে সোজা একজনের বাড়িতে ঢুকে যায় সে। খবর দেওয়া হয় বনদপ্তরে। খবর পাওয়ামাত্রই এক মুহূর্ত সময়ও নষ্ট না করে এলাকায় পৌঁছন বনকর্মীরা। পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। শুরু হয় চিতাবাঘটিকে ধরার তোড়জোড়। তড়িঘড়ি পুলিশ প্রায় গোটা এলাকা ফাঁকা করে দেয়। কলবাগান এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়। জাল দিয়ে ওই বাড়িটিকে ঘিরে ফেলা হয়।
আতঙ্কিত হয়ে পড়ে চিতাবাঘটিও। এরপর বনকর্মীরা ঘুমপাড়ানি গুলি করে চিতাবাঘটিকে কাবু করে। খাঁচাবন্দি করা হয় তাকে। তবে কীভাবে চিতাবাঘটি ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কলাবাগান এলাকায় লোকালয়ে ঢুকে পড়ল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বনকর্মীরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
কোচবিহারের ডিএফও সঞ্জীব দত্ত বলেন, সম্ভবত পাতলাখাওয়ার জঙ্গল থেকে চিতাবাঘটি খাবারের উদ্দেশ্যে লোকালয়ে এসেছে। কয়েক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় চিতাবাঘটিকে কাবু করা গিয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে জলদাপাড়ার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে চিতাবাঘটিকে।
অন্যদিকে বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ নীলাঞ্জন রায়চৌধুরী বলেন, উত্তরবঙ্গে চায়ের বাগান বা বিভিন্ন জায়গায় লেপার্ড থাকে। লেপার্ড প্রায়ই লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় ঘোরে। এটাই এদের বৈশিষ্ট্য। কিন্তু এটাও দেখতে হবে আমাদের অরণ্য অনেক কমে এসেছে। এত বড় দেশে মাত্র ৫ শতাংশ প্রটেক্টেড এরিয়া। ফলে বন্যপ্রাণের লোকালয়ে ঢুকে পড়ার প্রবণতাও বাড়ছে।