কলকাতা ব্যুরো: রবিবার মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে ব্যারাকপুর গান্ধীঘাটে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা তথা সাংসদ অর্জুন সিং। সেখান থেকে সংবাদ মাধ্যমের সামনে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ফের একবার সরব হলেন রাজ্যপাল। বাংলার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করতেও ছাড়লেন না এদিন।

গান্ধীজির মৃত্যু দিনে ব্যারাকপুরের গান্ধী ঘাটে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে ধনখড় বলেছেন, বাংলা গণতন্ত্রের গ্যাস চেম্বার হয়ে যাচ্ছে। এটা বরদাস্ত করতে পারব না। বাংলার মাটিকে রক্তরঞ্জিত হতে দেখতে পারব না। বাংলায় আইনের শাসন নেই, শাসকের আইন চলছে। সংবিধানকে রক্ষা করা আমার কাজ।

এছাড়া রাজ্যের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাও করতে চেয়েছেন জগদীপ ধনখড়। বলেন, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শপথ গ্রহণ করেছিলেন যে তিনি তাঁর সব কাজ ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী করবেন। তাই এই সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের কাছ থেকে আমি মুখ্যমন্ত্রী কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি যেন এই খুন, জখম, হিংসা, ধর্ষণের বিষয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আলোচনায় বসেন। প্রজাতন্ত্র এটাই চায় যেন শাসক তাঁর সঠিক কর্তব্য পালন করে। আমাদের ব্যক্তিগত ইগোর বাইরে বেরিয়ে  কাজ করতে হবে। জনগণের সেবা করতে হবে।

এছাড়া ফের রাজ্যের কাছে নেতাইকাণ্ডের রিপোর্ট তলব করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সোমবার সকাল ১১টার মধ্যে মুখ্যসচিবকে রাজভবনে হাজিরা দিতে বলেছেন তিনি। ওকে এর আগেও একাধিকবার এই ঘটনা নিয়ে মুখ্যসচিবকে তলব করেছিলেন তিনি। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে তিনি যেতে পারেন নি। নেতাই দিবসের দিন ঝিটকার জঙ্গলে কেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আটকে দেওয়া হয়েছিল তার কারণ জানতে চেয়েই মুখ্যসচিবকে তলব করেছিলেন তিনি।

এর আগে প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের দিন বিধানসভা ভোটার দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সরাসরি বিধানসভার স্পিকারকে নিশানা করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তিনি অভিযোগ করেছিলেন স্পিকার তাঁকে অন্ধকারে রেখে কাজ করছেন। কোনও ফাইল আটকে নেই রাজভবনে। স্পিকার তাঁর সম্পর্কে ভুল তথ্য দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। পাল্টা রাজ্যপালকে নিশানা করে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন অসৌজন্যমূলক আচরণ করছেন রাজ্যপাল। ভুল তথ্য দিচ্ছেন তিনি।

তবে শুধু স্পিকারকেই নয়, রাজ্যের আমলাদেরও নিশানা করেছিলেন তিনি। সরাসরি অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যের প্রধাসনিক আধিকারীকরাও সংবিধান মেনে কাজ করেন না। রাজ্যের মানুষের ভোট দেওয়ার কোনও স্বাধীনতা নেই। ভোটারদের অধিকার এখানে লঙ্ঘন করা হয় বলে অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যপাল ধনখড়। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী সাংবিধানিকভাবে রাজ্যপালের কাছে দায়বদ্ধ।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version