কলকাতা ব্যুরো: বলিউড অভিনেতা সোনু সুদ ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ তুলল সিআরবিটি। তাদের দাবি, সদ্য সোনু সুদের বাড়িতে আয়কর বিভাগ অভিযান চালানোর পরই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। ঘটনায় নাম জড়িয়েছে লখনউয়ের একটি সংস্থারও।
সিআরবিটি-এর দাবি, সোনু তাঁর আয় বহির্ভূত রোজগারকে ভুয়ো ঋণ হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। যাঁদের কাছ থেকে তিনি সেই ঋণ নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন, তাঁদেরও কোনও অস্তিত্ব মেলেনি ৷ একইসঙ্গে, সোনুর বিরুদ্ধে এফসিআর আইন ভঙ্গেরও অভিযোগ আনা হয়েছে।
সূত্রের দাবি, বিদেশ থেকে অনুদান সংগ্রহের সময় এই আইন ভঙ্গ করেছেন তিনি। উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর সোনু সুদ ও লখনউয়ের সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের কাজে নামে সিআরবিটি। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী দিনেও এই কাজ চলবে ৷ আয়কর বিভাগের দাবি, সনু সুদের বাড়িতে তল্লাশি চলাকালীনই তাঁর বিরুদ্ধে হিসাব বহির্ভূত সম্পদ থাকার প্রমাণ সামনে আসে।
আয়কর বিভাগ সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ২০টি এমন নাম পাওয়া গিয়েছে, যেখান থেকে বা যাঁদের থেকে ঋণ নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন সোনু সুদ ৷ অথচ, এই ঋণদানকারীদের বাস্তবে কোনও অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি ৷ কর ফাঁকি দেওয়ার জন্যই ঋণের আড়ালে মোটা টাকার লেনদেন করা হয়েছে ৷ আয়কর বিভাগের অভিযোগ, বেআইনিভাবে অর্জিত এই টাকা খরচ করে নানা জায়গায় বিনিয়োগ করা হয়েছে ৷ সম্পত্তি কেনা হয়েছে ৷ সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ২০ কোটি টাকার কর ফাঁকির প্রমাণ হাতে পেয়েছেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত, কোভিড আবহে সোনু যেভাবে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তা নজর কেড়েছে গোটা দেশের ৷ তাঁর এই কাজের জন্য সোনুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন দেশবাসী ৷ এখন সোনুর সেই সমাজসেবাও আয়কর বিভাগের আতসকাচের নীচে চলে এসেছে ৷ তাদের পেশ করা তথ্য বলছে, ‘‘২০২০ সালের ২১ জুলাই সোনু যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা খুলেছিলেন, ২০২১ সালের ১ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত ১৮ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা অনুদান পেয়েছে সেই সংস্থা ৷ যার মধ্যে থেকে মাত্র ১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা ত্রাণের কাজে খরচ করা হয়েছে ৷ বাকি প্রায় ১৭ কোটি টাকা অব্যবহৃত অবস্থায় এখনও ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্টে পড়ে রয়েছে ৷’’
পাশাপাশি, এই সংস্থাই বিদেশ থেকে প্রায় ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা অনুদান পেয়েছে বলে দাবি আয়কর বিভাগের ৷ এছাড়া, লখনউয়ের একটি সংস্থার সঙ্গেও বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে সোনু সুদের। অভিযোগ, এই সংস্থা তাদের বেআইনি আয় লুকোনোর জন্য ভুয়ো বিল এবং চুক্তিপত্র ব্যবহার করে। আয়কর বিভাগের অভিযানে সেইসব নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়। এখনও পর্যন্ত যে তথ্যপ্রমাণ হাতে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, এইভাবে ওই সংস্থা ৬৫ কোটিরও বেশি টাকা অনুদান হিসাবে লাভ করেছে ৷ এই ঘটনার তদন্তে নেমে সব মিলিয়ে মুম্বই, লখনউ, কানপুর, জয়পুর, দিল্লি এবং গুরুগ্রামের মোট ২৮টি জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে।