কলকাতা ব্যুরো: নিয়োগে বেনিয়ম মামলায় আরও অস্বস্তিতে এসএসসি। এবার চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ মামলার তদন্তে নেমে বিস্ফোরক রিপোর্ট দিল অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বাধীন অনুসন্ধান কমিটি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, গ্রুপ-ডি পর্যায়ে নিয়োগে ৬০৯টি ভুয়ো সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছিল। আর এই সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছিল কমিটির প্রাক্তন উপদেষ্টা-সহ একাধিক পদাধিকারীদের নির্দেশেই। রিপোর্টেও আরও একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। পাশাপাশি শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে গ্রুপ-সি নিয়োগে দুর্নীতির অনুসন্ধান কমিটি থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগ।
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট জমা দেয় অনুসন্ধান কমিটি। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুমতিতে যুগ্ম সচিব যে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল তা বেআইনি। সরাসরি রাজ্য সরকারের সঙ্গে এই কমিটির সরাসরি কোনও সম্পর্ক আছে কি না সেটাও স্পষ্ট নয়। রিপোর্ট আরও বলা হয়েছে, চেয়ারম্যানকে অন্ধকারে রেখেই দেওয়া হত এই সুপারিশপত্র। এই সুপারিশপত্রের জন্য হিসেব রাখার জন্য আলাদা রেজিস্ট্রার ছিল।
রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা এবং সমরজিৎ আচার্য ভুয়ো সুপারিশপত্র তৈরি করেছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং ভুয়ো নথি বানানোর জন্য ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় FIR দায়ের করা উচিত বলে মনে করেছে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির অনুসন্ধান কমিটি। তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এসএসসির কর্মী-আধিকারিক সুবীরেশ ভট্টাচার্য, শর্মিলা মিত্র, মহুয়া বিশ্বাস, শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়, শেখ সিরাজউদ্দিন বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত এবং শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে পদক্ষেপ করা উচিত। এফআইআর দায়ের করারও সুপারিশ করেছে এই তদন্তকারী কমিটি।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ভুয়ো সুপারিশপত্রগুলি শান্তিপ্রসাদ সিনহা নিজে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে দিয়েছিলেন। কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগপত্র ছাপার জন্য রাজেশ লায়েক বলে একজন কর্মীকে নির্দেশ দিতেন। এই নিয়োগপত্রগুলি পর্ষদের অফিস থেকে না দিয়ে এসএসসির নবনির্মিত ভবন থেকে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিচারপতি বাগের কমিটি।