কলকাতা ব্যুরো: ভারত এই ‘‘উপমহাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শক্তি’’। তাই ভারতের সঙ্গে ‘‘অতীতের মতো’’ সদভাব বজায় রেখেই এগোতে চায় আফগানিস্তানের তালিবান শাসকরা। এমনকী, আফগানিস্তানের সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং বাণিজ্যিক উন্নতির ক্ষেত্রেও নয়াদিল্লিকে পাশে চায় তারা।
গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের পর এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল তালিবান ৷ তাদের দাবি, নয়াদিল্লির সঙ্গে আপাতত কোনও সংঘাতে যেতে চায় না তালিবান নেতৃত্ব ৷ আফগানিস্তানে তালিবানের পুনরুত্থানের পর থেকেই কার্যত এই জঙ্গিগোষ্ঠীর গুণগানে মেতেছে চিন, পাকিস্তানের মতো কিছু দেশ ৷ স্বাভাবিকভাবেই ভারত সেই পথে হাঁটেনি ৷ অন্যদিকে, ভারতের সঙ্গে তালিবানের তোষণ ও পোষণকারী চিন বা পাকিস্তানের সম্পর্কও দিন দিন খারাপ হচ্ছে ৷
এই অবস্থায় এখনও পর্যন্ত আফগানিস্তানে তালিবানের পুনরুত্থানকে জঙ্গি হামলা হিসাবেই দেখছে নয়াদিল্লি ৷ আগামী দিনে সেই ভাবনায় কোনও পরিবর্তন আসে কিনা, এখনই তা বলা সম্ভব নয় ৷ ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান, ভারত তার অবস্থান স্পষ্ট করতে আরও কিছুটা সময় নিতে পারে ৷ পরিস্থিতি বুঝেই নেওয়া হতে পারে সিদ্ধান্ত ৷
কাতারের রাজধানী দোহা থেকে তালিবানের লিখিত বার্তা পাঠ করেন শের মহম্মদ আব্বাস স্ত্যানেকজাই। বর্তমানে তিনিই তালিবান কার্যালয়ের ডেপুটি প্রধান ৷ তাছাড়া, ১৯৯৬ সালে আফগানিস্তানে যে কেয়ারটেকার সরকার গঠিত হয়েছিল, তার সহকারী বিদেশমন্ত্রীও ছিলেন এই শের মহম্মদ আব্বাস স্ত্যানেকজ়াই ৷ সেখানেই তিনি বলেন, ‘‘উপমহাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হল ভারত’’ ৷ ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান, তালিবানের এই অবস্থানে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে চলে গেল পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ৷
৪৬ মিনিটের ওই ভিডিয়ো বার্তাটি সম্প্রচারিত হয় গত শনিবার ৷ সেখানে শের মহম্মদকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এই উপমহাদেশে ভারত অতন্যম গুরুত্বপূর্ণ শক্তি ৷ আমরা ভারতের সঙ্গে আগের মতোই সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে চাই ৷’’
শের মহম্মদ বলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে এতদিন যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল, তা আমরা অটুট রাখতে চাই ৷ এই বিষয়ে আগামী দিনে যাতে আরও অগ্রসর হওয়া যায়, সেদিকেই আমাদের নজর থাকবে ৷ পাকিস্তানের মধ্যে দিয়ে ভারতের সঙ্গে চলা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷ ভারতের সঙ্গে আকাশপথে বাণিজ্যের সুযোগও এখনও খোলা রয়েছে ৷’’