কলকাতা ব্যুরো: কথায় নয় কাজে করে দেখালেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ২২ গজের মতোই শেষ বলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিলেন ‘কাপ্তান’। আপাতত বাঁচিয়ে নিলেন তাঁর প্রধানমন্ত্রীর কুরসি। তার পরিবর্তে দ্রুত নির্বাচন প্রক্রিয়ার পথে হাঁটল ইমরানের সরকার।

রবিবার সকাল থেকে পাকিস্তানে একের পর এক নাটক চলছিল। এই আস্থা ভোটকে কেন্দ্র করে সে দেশের একাধিক এলাকায় অশান্তি চলছিল। অশান্তি রুখতে ইসলামাবাদে জারি হয়েছিল ১৪৪ ধারা। শোনা গিয়েছিল, গ্রেপ্তার হতে পারেন ইমরান। এর মাঝেই বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ পাক সংসদে অধিবেশন শুরু হয়। যেখানে পাক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা ছিল। আর এই পরিস্থিতিতে পাক সরকারের বিরুদ্ধে সংবিধান অবমাননার অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ বিরোধীরা। এক পাক সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত নোটিস জারি করেছে সেদেশের শীর্ষ আদালত। 

এদিন অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল হতেই পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি টুইটারে ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানিয়ে দেন, সরকার সংবিধানের অবমাননা করেছে। অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটই দিতে দেয়নি। জোটবদ্ধ বিরোধীরা সংবিধান ছাড়তে রাজি নয়। আমাদের আইনজীবীরা ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের পথে। আমরা সমস্ত প্রতিষ্ঠানের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি পাক সংবিধানকে সুরক্ষার জন্য এগিয়ে আসতে।

অধিবেশনের শুরুতেই নাটকের নতুন অঙ্ক রচিত হয়। দেখা যায় বিরোধীরা ইমরানের আগে সংসদের ডেপুটি স্পিকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। এর পরেই ইমরানের বিরুদ্ধেও অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। সেই সময় সংসদে ইমরানের দলের মাত্র ২২ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। হার প্রায় নিশ্চিত। হাজির ছিলেন না ইমরানও। ঠিক যখন পাকিস্তানের নির্বাচিত সরকারের পতন অবশ্যম্ভাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে, ঠিক তখনই শেষ মুহূর্তে ম্যাচ বাঁচিয়ে নিলেন ১৯৯২ সালের বিশ্বজয়ী পাকিস্তান দলের ক্যাপ্টেন। 

পাকিস্তানের সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবই খারিজ করে দিলেন ডেপুটি স্পিকার। তিনি জানালেন, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব আসলে সংবিধানবিরোধী।

এই প্রস্তাবের পিছনে বিদেশি চক্রান্তের অভিযোগ উঠলো। একইসঙ্গে আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে গেলো পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি। তারপরই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ইমরান। সেখানে তিনি জানান, রাষ্ট্রপতির কাছে সংসদ ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করা হবে। একইসঙ্গে দ্রুত নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরুর প্রস্তাব দেওয়ার কথাও জানিয়ে রাখলেন ইমরান। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর সুপারিশ মেনে নিলেন রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি। দ্রুত নির্বাচনের পথে এগোচ্ছে পাকিস্তান।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version