কলকাতা ব্যুরো: আমি আগাগোড়া বোরোলিন নিয়ে চলি। জীবনের ওঠাপড়া আমার গায়ে লাগে না। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের অনুগত সৈনিক এবং অনুগত সৈনিকের মতোই দলের নির্দেশ মেনে চলবেন। ১৪ দিনের ‘সেন্সর’ প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান জানিয়ে দিলেন কুণাল ঘোষ।

এদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় কুনাল ঘোষ বোরোলিনের একটি টিউব সামনে দেখান। ৭০ বা ৮০ র দশকে যাঁদের বেড়ে ওঠা, তাদের বিনোদনে অন্যতম আকর্ষণ ছিল রেডিও। আর শনির আলসে দুপুরে হাস্কি, আদূরে গলার শ্রাবন্তী মজুমদারের নেশা ধরানো ‘সুরভিত অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম বোরোলিন ‘। সেই জিঙ্গেল তখন থেকে আম বাঙালির মন জয় করে নেয়। পুলক বন্দোপাধ্যায় এর লেখায় ভি বালসারার সুরের সেই মাতন আজও কতটা প্রাসঙ্গিক, তা যেনো আবার টের পাওয়া গেলো রাজনীতির অঙ্গনে।

পৌরত্তের দরজায় পৌঁছে যাওয়া বাঙালি রাজনীতিক কুনাল নিজের বিড়ম্বনা বাঁচাতে হাতিয়ার করলেন সেই বোরোলিনকে। সেই বিখ্যাত ট্যাগলাইন ‘জীবনের নানা ওঠা পড়া যেন সহজে গায় না লাগে’ কুনাল ভরসা রাখলেন সেই ট্যাগ লাইনে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কুনালের এই বোরোলিনে ভরসা কোথাও কি দলকে দলের সিদ্ধান্তকে ঘুরিয়ে চ্যালেঞ্জ নয়। তাকে দল সেন্সর করায় বিরম্বনা কি তার বাড়লো না। সেটা বোঝাতেই বোরোলিনের প্রসঙ্গ? অথবা তিনি কি নিজের জীবনের নানান ওঠাপড়াকে বোরোলিনের ঢালে আটকাতে চেয়েছেন। সে যাই হোক, এই আবহে তৃণমূল, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কুনাল ঘোষ, বোরোলিন –এক সুত্রে বাধা পরলো। বাঙালির জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়া এক বাঙালি শিল্পপতি সংস্থার ব্র্যান্ড ফের প্রাসঙ্গিক রাজনীতির সৌজন্যে।

তৃণমূল সূত্রের দাবি, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে লাগাতার আক্রমণ করার জেরে দলের অন্দরে শাস্তির মুখে পড়েছেন কুণাল। ১৪ দিনের জন্য তাঁকে পার্থ সংক্রান্ত কোনও বিষয় বা দলের অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করতে নিষেধ করেছে শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই ‘শাস্তি’ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে কুণালবাবু এদিন জানিয়ে দেন, আমি তৃণমূলের কঠিন দিনের সৈনিক। আমি ছিলাম, আছি, আমি তৃণমূলের সৈনিক থাকব। দল করতে গেলে বহু সময় দলের নানা বক্তব্য মানতে হয়।

এদিন আরও একবার তিনি জানিয়ে দেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে আর কোনও মন্তব্য করব না। আমি দলের শৃঙ্খলাবদ্ধ সৈনিক। যখন যেখানে দল যা বলবে, আমি মেনে চলব।
কুণালের বার্তা, আমি তৃণমূল কংগ্রেসটা মন থেকে করি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা করি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুধু নেতা ভাবি না। মন থেকে ভালবাসি। আমার যতক্ষণ মন সায় দেবে, আমি তৃণমূলের কর্মী-সৈনিক ছিলাম, আছি, থাকব। তাতে কে কী বলল, আমার কিছু যায় আসে না। আবারও বলছি আমি বোরোলিনে বিশ্বাস করি, জীবনের ওঠাপড়ায় কিছু যায় আসে না।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version