কলকাতা ব্যুরো: ময়দানের মাঠ নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি খতিয়ে দেখতে কমিটি গড়ে দিল হাইকোর্ট। ময়দানে যত্রতত্র নোংরা ফেলা, সবুজ ধ্বংস, বেআইনি পার্কিং কেন, এই নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছিল বিচারপতি সঞ্জীব ব্যানার্জি ও অরিজিৎ ব্যানার্জির ডিভিশন বেঞ্চ।
নিয়মিত ময়দানের আশপাশ দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে হঠাৎ স্তুপাকার কাগজ, যত্রতত্র নোংরা দেখে সোমবার আদালতে এসেই তা নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেন বিচারপতি সঞ্জীব ব্যানার্জি রীতিমতো বিরক্ত আদালত ময়দানের সবুজ বাঁচাতে সেদিনই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করে। বিচারপতি অবাক হন রেড রোডের পাশে জঞ্জাল দেখে। সেদিনই বিচারপতি অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ও এডভোকেট জেনারেলকে জানিয়ে দেন ময়দানে জঞ্জাল কেন সে বিষয়ে সুয়ো মোটো মামলা করছে হাইকোর্ট।


এদিন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াইজে দস্তুর ও এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তকে নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দেন। সেনাবাহিনী ও রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে ময়দানের মাঠ রক্ষণাবেক্ষণ ও ভবিষ্যতে ময়দান নিয়ে কিধরণের পরিকল্পনা হতে পারে তা নিয়ে রিপোর্ট দেবে এই কমিটি।
শুধু জঞ্জাল ফেলাই নয়, মাঠের মধ্যে যেভাবে বেআইনি পার্কিং করা হয়, রাস্তাগুলি জুড়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে তা নিয়েও বেজায় ক্ষুব্ধ ছিল হাইকোর্ট।
আবার বছর শেষে বেড়াতে আসা নাগরিকদের ময়দান পরিষ্কার রাখতে সচেতন করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তারা ময়দানে সর্বত্র ঘুরে বেরালেও যাতে খাবার বা আবর্জনা উচ্ছিষ্ট মাঠে না ফেলে রাখেন তা নিশ্চিত করতে ডাস্টবিনের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।


এছাড়াও যেসমস্ত হকাররা ময়দানে খাবার বিক্রি করেন, তারা যাতে একদিকে স্বাস্থ্য সম্মত খাবার বিক্রি করে। অন্যদিকে, ময়দান পরিচ্ছন্ন রাখতে তাদেরকেও সতর্ক করা হয়। আদালতের বক্তব্য, ময়দান পরিচ্ছন্ন রাখতে এই সময়েই লাগাতার সচেতনতার প্রচারে জোর দিতে হবে।
পাশাপাশি, হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়েরের পর দুদিন ধরে যেভাবে নো পার্কিং বোর্ড বা গার্ড দিয়েছে বেআইনি পার্কিং রুখতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা সন্তোষ জনক বলে মত আদালতের। এই শৃংখলার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ব্যাপারেও জোর দেওয়া উচিত বলে মত আদালতের।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এর সৌধ গাড়ির দূষণে নষ্ট হচ্ছে। এ নিয়েও দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি ২০০৭ সালে বিচারপতি ভাস্কর ভট্টাচার্য্য ডিভিশন বেঞ্চ ময়দানের দূষণ ঠেকাতে ধর্মতলা থেকে সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল। হাইকোর্ট এবার সেই নির্দেশ কার্যকর করতে রাজ্যকে বাধ্য করবে কিনা, এখন সে দিকে তাকিয়ে রয়েছেন পরিবেশ কর্মীরা।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version