কলকাতা ব্যুরো: স্কুলের ফি মেটাতে না পারলেও কোনও ছাত্রছাত্রীর ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বন্ধ করা চলবে না। পাশাপাশি কোন পড়ুয়াকে স্কুল থেকে তাড়িয়েও দেওয়া যাবে না। শুক্রবার স্কুল ফি মামলায় স্পষ্টভাবে এই নির্দেশ জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ আজ এই নির্দেশ দেয়।
এদিন বকেয়া ফি মিটিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে দু’টো ভাগে ভাগ করে অভিভাবকদের টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল আদালত । আগামী ২৫ অক্টোবরের মধ্যে ৮০ শতাংশ টিউশন ফি ও সেশন ফি এবং ২০ শতাংশ স্কুলের অন্যান্য ফি আলাদা আলাদা আলাদা চেকে পেমেন্ট করার নির্দেশ দিল আদালত । স্কুলগুলো ওই টাকা আলাদা আলাদা অ্যাকাউন্টে জমা রাখবে। আদালতের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত কুড়ি শতাংশ টাকা খরচ করতে পারবে না স্কুলগুলো । ২৫ অক্টোবরের পর স্কুলগুলি পৃথকভাবে কত টাকা কোন ছাত্রছাত্রীর থেকে থেকে পেয়েছে, সে ব্যাপারে তালিকা তৈরি করবে । তালিকা তৈরি করে আদালতকে জানাতে হবে। আগামী ৪ ডিসেম্বর ফের শুনানি এই মামলার।
প্রসঙ্গত, অতিমারি পরিস্থিতিতে পঠন-পাঠন স্বাভাবিক নয়, তবু নেওয়া হচ্ছে বর্ধিত ফি ৷ এই মর্মে কলকাতা হাইকোর্টে ২০১৯ সালে মামলা করেছিলেন বিনীত রুইয়া নামে এক ব্যক্তি। সেই মামলায় বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল স্কুলগুলোকে ফি নেওয়ার ক্ষেত্রে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে কুড়ি শতাংশ ছাড় দিতে। তারপর এই মামলাটি আসে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য ডিভিশন বেঞ্চে। ডিভিশন বেঞ্চ বিভিন্ন সময়ে একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন।
চলতি বছরেও করোনা প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে স্কুলগুলোর পঠন-পাঠন স্বাভাবিক নয়, ক্লাস চলছে মূলত অনলাইনে। তা সত্ত্বেও স্কুলগুলো ছাত্রছাত্রীদের কাছে ১০০ শতাংশ ফি দাবি করছে জানিয়ে ফের মামলাকারী বিনীত রুইয়া কলকাতা হাইকোর্টে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন । সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত জুন মাসে ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশে জানায়, ৩১ জুলাই পর্যন্ত বকেয়া ফি মেটাতে না পারলেও কোনও ছাত্রছাত্রীর নাম যেন না কাটা হয় স্কুলের খাতা থেকে। বেসরকারি স্কুল ছাড়াও রাজ্যের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও এই নির্দেশ প্রযোজ্য হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও বকেয়া ফি মেটানোর ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিভাবকরাও।
শুক্রবার হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর মামলাকারী বিনীত রুইয়ার আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা আগারওয়াল জানান, আজকে আদালতের নির্দেশের মূল বিষয় হচ্ছে ফি সংক্রান্ত ব্যাপারে কোনও স্কুল কোন পড়ুয়ার ক্লাস বন্ধ করতে পারবে না । পরীক্ষায় বসা থেকেও বিরত করতে পারবে না । আগামী ৪ ডিসেম্বর ফের শুনানি এই মামলার ।