কলকাতা ব্যুরো: ফের ধর্ষণ মামলার কিনারা করতে দুঁদে আইপিএস অফিসার দময়ন্তী সেনের উপর ভরসা রাখলো কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার ধর্ষণের চারটি ঘটনায় জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভারদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে। তাতে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করে দিয়েছে উচ্চ আদালত। সিটের দায়িত্ব দেওয়া হলো কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন গোয়েন্দা আধিকারিক দময়ন্তী সেনকে। এই মুহূর্তে তিনি ডিআইজি, ট্রেনিং পদে রয়েছেন। ২০১২ সালে পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণ মামলায় তদন্ত করেছিলেন তিনি। সেই সময় তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রশ্নগসা করেছিলেন অনেকেই। তবে ওই মামলার তদন্ত ঘিরেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে চাপানউতোর তৈরি হয়েছিল দময়ন্তী সেনের। এরপরই তাঁকে কলকাতা পুলিশের পদ থেকে বদলি করা হয়। দীর্ঘ সাত বছর পর আবার তিনি কলকাতা পুলিশে ফিরে এসেছেন। এখন তিনি কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল কমিশনার।

তবে হাইকোর্টের নির্দেশের পর মাটিয়া ছাড়াও ইংরেজবাজার, দেগঙ্গা, বাঁশদ্রোণী ধর্ষণ মামলার তদন্তে নেতৃত্ব দেবেন দময়ন্তী। আদালতের নজরদারিতেই চলবে তদন্ত। মঙ্গলবার এমনই নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। এই সংক্রান্ত পরবর্তী শুনানি ২০ এপ্রিল।

মাটিয়া, ইংরেজবাজার, দেগঙ্গা, বাঁশদ্রোণী– সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্ষণের মতো নিন্দনীয় ঘটনার একাধিক খবর মিলেছে। কোথাও কোথাও যৌন নির্যাতনের মুখে পড়়েছে নাবালিকাও। গত ২৩ মার্চ মাটিয়ায় এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে এক যুবক। এই ঘটনায় নাম জড়ায় মেয়েটির সম্পর্কিত এক পিসির। এরপরই ধর্ষণের মূল মাস্টারমাইন্ড অর্থাৎ নির্যাতিতার পিসি রোজিনা বিবিকে চার ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করে পুলিস। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান জেলার এসপি, বাদুড়িয়ার এসডিপিও ও মাটিয়া থানার ওসি-সহ একাধিক পুলিস আধিকারিক।

আগেই প্রতিটি ধর্ষণের ঘটনায় হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। মঙ্গলবার সেই সব মামলার একসঙ্গে শুনানি হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। তাতে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বলেন, আমরা প্রতিটি ঘটনার দিকে আলাদা করে নজর রাখছি। যদি কোনও ঘটনায় আলাদা করে কোনও আলাদা এজেন্সি বা কোনও বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্তের প্রয়োজন হয়, সেটা আমরা করব। এই ধরনের ঘটনায় আমি বাকরুদ্ধ। আগে দিল্লি বা দেশের অন্য জায়গা থেকে এই ধরনের অভিযোগ পাওয়া যেত। 

তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, পরিকাঠামো থাকার পরেও কেন এই ঘটনা? কেন বারবার একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে? এর জবাবে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, এই রাজ্য মহিলাদের জন্য অন্যতম সুরক্ষিত রাজ্য। আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছি।

এরপরই প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ কলকাতা পুলিশেরব স্পেশ্যাল কমিশনার দময়ন্তী সেনকে বিশেষ তদন্তকারী দলের দায়িত্ব দেয়। বলা হয়, তদন্তভার গ্রহণ করতে কোনও অসুবিধা থাকলে দময়ন্তী সেন আদালতে জানাবেন।  

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version