কলকাতা ব্যুরো: প্রবল তুষারপাত শৈলশহরে। সরস্বতী পুজোর দিনে বরফে ঢাকা দার্জিলিং এর ম্যাল সহ একাধিক জায়গা। চারপাশ সাদা বরফের টুকরোয় ভরাট! কয়েকদিন আগেই করোনা ও ওমিক্রনের কোপ পড়েছিল পর্যটনেও। বাতিল করতে হয়েছিল বহু ঘোরার পরিকল্পনাও। কিন্তু এবার পাহাড়ে বেড়াতে এসে দ্বিগুণ আনন্দ মিলেছে পর্যটকদের। এছাড়া লাভা ও ভুটান ভরে গিয়েছে বরফে। ভুটানের পারো বিমানবন্দর দেখে চেনার উপায় নেই।

অঝোরে তুষার ঝরে চলেছে পাহাড়ে। ম্যাল পর্যটকে ঠাসা। বরফ নিয়ে খেলায় মত্ত পর্যটকরা! এমন সুযোগ সচরাচর আসে না। তাপমাত্রা -১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর তাই পর্যটকরা চুটিয়ে শীত উপভোগ করছেন। ২০০৭ সালে ভ্যালেন্টাইন ডে’তে শেষবার ফেব্রুয়ারিতে বরফ পড়েছিল দার্জিলিংয়ে। দার্জিলিংয়ের এক পর্যটেকর কথায়, ২০১২ সালে এতো তুষারপাত হয়েছিল শৈলরানিতে। তারপর এই বছর তুষারপাত শুরু হয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত মরশুমের সর্বোচ্চ তুষারপাত হয়েছে দার্জিলিংয়ে।

শুক্রবার থেকেই চলছে তুষারপাত। গ্লেনারিজ থেকে কেভেন্টার্সে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এছাড়া আজও ঘুম, জোরবাংলো, কার্শিয়ংয়ের চটকপুর, ডাউহিল, সান্দাকফু, ফালুট, টুমলিংয়েও তুষারপাত হয়েছে। মন ভালো করার মতো ছবি। বহু বছর বাদে এমন ছবি পাহাড়ে। পাহাড়ে বেড়াতে এসে বরফ পেয়ে পর্যটকেরা আনন্দে মেতেছেন। পাহাড়ে জাঁকিয়ে শীত আর তুষারপাত খুব ভাগ্য ভালো হলেই দেখতে পাওয়া যায়। তাও আবার ফেব্রুয়ারি মাসে। সরস্বতী পুজো যাঁরা শৈলশহরে কাটাচ্ছেন তাঁদের আজ সোনায় সোহাগা। ভ্যালেন্টাইনস উইক কাটাতেও ইতিমধ্যেই অনেকে গিয়েছে দার্জিলিং। তাঁরাও মেতেছেন আনন্দে। তবে একাধিক রাস্তা বরফে ধেকে থাকায় গাড়ি চালাতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন ড্রাইভাররা। 

শনিবার দার্জিলিংয়ের সোনাদা, ঘুম, কালিপোখরি, তিন মাইল, জোড়বাংলো, সান্দাকফু, টাইগার হিলে বরফ পড়েছে। অন্যদিকে, সিকিমে তুষারপাত চলছেই। সিকিমের লাচুং, লাচেন, ছাঙ্গু লেক, কালাপাহাড় প্রভৃতি এলাকায় বরফ পড়ছে। ওই এলাকাগুলিতে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি। এনিয়ে গত এক মাসে দার্জিলিংয়ে ৬ বার তুষারপাত হল। আবহাওয়া অফিস সূত্রে খবর, দার্জিলিংয়ে তুষারপাত প্রায় দেড় দশকের রেকর্ড ভাঙল। যদিও চলতি বছরে ১১ দিন তুষারপাত হয়ে গিয়েছে দার্জিলিংয়ে।

তবে নতুন করে তুষারপাত হলে শেষ কয়েক বছরের রেকর্ড ভেঙে দেবে বলে জানাচ্ছে হাওয়া অফিস। এদিকে, আজ সরস্বতী পুজো।তার আগেই রাজ্যজুড়ে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। শুক্রবার ভোর থেকে শিলিগুড়ি সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় মাঝারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। পাশাপাশি শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে ডুয়ার্সজুড়ে। ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট, হাসিমারা, কালচিনি, হ্যামিলন্টনগঞ্জ, দলসিংপাড়া সহ সর্বত্র বৃষ্টি শুরু হয়েছে। মানুষজন একপ্রকার গৃহবন্দী। রাস্তাঘাট সব ফাঁকা। আর বৃষ্টির ফলে জাঁকিয়ে শীত পড়েছে ডুয়ার্সজুড়ে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version