কলকাতা ব্যুরো: ময়নাগুড়ির দোমহনিতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে? আপ বিকানের এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় ইঞ্জিনের যে সমস্যা ছিল প্রাথমিক তদন্তে তা স্পষ্ট হয়েছে। এই ইঞ্জিন ছিল ওয়াপ ফোর ক্যাটিগরির। এতে চারটি করে ট্র্যাকশন মোটর থাকে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ইঞ্জিনের একটি ট্র্যাকশন মোটর ভেঙে পড়েছিল। তাতেই বিপত্তি ঘটে। ট্র্যাকশন মোটরের ভূমিকা হল এটি ইঞ্জিনের চাকাকে রেল লাইনে ধরে রাখতে ও চাকাকে ঘোরাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির দোমহনিতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল ও জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে ৩৬ জনের।
এদিকে, ট্রেনটির চালক ও সহকারী চালক জানিয়েছেন, সমস্ত সিগন্যালই সবুজ ছিল। ট্রেনটি ঘণ্টায় ৪০ কিমি বেগে নয়, চলছিল ৯৫ থেকে ১০০ কিমি গতিতে। তাঁরা আচমকা প্রচণ্ড ঝাঁকুনি অনুভব করেন। তাঁরা এমার্জেন্সি ব্রেক কষে ট্রেনটি থামান।
শুক্রবার ডিজি আরপিএফ লোকো পাইলট ও সহকারী লোকো পাইলটকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। কমিশনার ওফ রেলওয়ে সেফটি ইতিমধ্যেই তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি এদিন দুর্ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি জানান, ট্রেনের ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটিই দুর্ঘটনার কারণ। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই অনুমান।
প্রসঙ্গত, অভিশপ্ত বিকানের এক্সপ্রেসে চড়ে বৃহস্পতিবার জয়পুর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন কোচবিহারের বাসিন্দা অনেক পরিযায়ী শ্রমিক। রাজস্থানের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতেন তাঁরা। করোনার বাড়বাড়ন্তের জেরে বাড়ি ফিরছিলেন শ্রমিকরা। বাড়ি পৌঁছনোর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। তাতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ পটনা-গুয়াহাটি বিকানের ১৫৩৬৬ এক্সপ্রেসটি লাইনচ্যূত হয়। দুর্ঘটনার সময় ট্রেনের গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার ছিল বলে প্রথমে জানা গিয়েছিল। কিন্তু পরে লোকো পাইলট জানান, গতিবেগ ছিল ৯৫ থেকে ১০০ কিলোমিটার। দুর্ঘটনার তীব্রতা এত বেশি ছিল যে, ইঞ্জিনের পর থেকে ১২টি কামরা লাইনচ্যূত হয়ে যায়। একটি কামরার উপর উঠে যায় আর একটি কামরা। একাধিক কামরা লাইনচ্যূত হয়ে যায়। এমনকি একটি কামরা জলেও গিয়ে পড়ে বলে জানা গিয়েছে।