কলকাতা ব্যুরো: এদেশ থেকে বাংলাদেশ যাওয়ার সময় জাহাজ থেকে ফ্লাই অ্যাশ বা ছাই নদীতে ফেলে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় তদন্ত কমিটি গঠন করল জাতীয় সবুজ আদালত। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের বিশেষজ্ঞদের ওই কমিটিতে রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে এ রাজ্যের মুখ্য প্রধান বানপাল ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসককে কমিটিতে রেখেছে জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুনাল।
এই কমিটিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে হবে যে অভিযোগ করা হয়েছে তার কতটা বাস্তবতা আছে। এই সমস্যা দূর করতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে ব্যাপারেও মতামত দিতে হবে ওই কমিটিকে।
এদেশ থেকে ফ্লাই অ্যাশ বা ছাই নিয়ে জাহাজগুলি হলদিয়া হয ইয়ে বাংলাদেশ যায়। মূলত খুলনা,-মংলা এবং চট্টগ্রাম বন্দরে সেইসব ফ্লাই অ্যাশ নিয়ে গিয়ে জমা করা হয়। সেখানে সিমেন্টের কারখানায় এই ফ্লাই অ্যাশ ব্যবহার করা হয়। এ রাজ্য থেকে মূলত হুগলি নদী র মধ্যে দিয়েই জাহাজগুলি ফ্লাই অ্যাশ নিয়ে যেতে গিয়েই নদীতে তা পড়ে দূষণ ছড়াচ্ছে বলে গ্রীন ট্রাইব্যুনালে মামলা করে দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরাম।
তাদের অভিযোগ, দিনে প্রায় ১০০ টি এমন ফ্লাই অ্যাশ ভর্তি জাহাজ বাংলাদেশ যায়। তার থেকে প্রচুর ছাই হুগলি নদীতে পড়ে। তার ফলে এখানে দূষণ ছড়াচ্ছে। এই নদীতে ভালো মাছের উৎপাদন হয়। তাছাড়া ইলিশ, গঙ্গার ডলফিন, এছাড়া অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখার বিভিন্ন ছোট মাছ এবং প্রাণী পাওয়া যায় এই নদীতে। কিন্তু ফ্লাই অ্যাশ বা ছাই ফেলে দেওয়ায় সেখানে দূষণ ছড়াচ্ছে।
এর আগে সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে এইভাবে জলপথ ব্যবহার করতে গিয়ে বাঘের স্বাভাবিক বিচরণ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে ব্যাপারে ২০১৮ সালে সতর্ক করেছিল কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রক। তারপর থেকে কার্গো করে নিয়ে যাওয়ার বদলে জাহাজ এবং বার্জে তা নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবি।
যদিও মামলাকারীদের অভিযোগ, সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে এইভাবে ছাই নিয়ে যাওয়ার ফলে প্রবল ক্ষতি হচ্ছে জীবজগতের। এ ব্যাপারে কোন বন্দোবস্ত করা এবং প্রয়োজনে জরিমানারও দাবি তুলেছে মামলাকারীরা।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version