কলকাতা ব্যুরো: মেঘালয়ের ১৮ জন কংগ্রেস বিধায়কের মধ্যে ১২ জনই যোগ দিলেন তৃণমূলে। উত্তর পূর্বের রাজ্যে কংগ্রেস শিবিরকে আরও একটি বিশাল ধাক্কা দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। এর ফলে মেঘালয়ে কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ১৮ থেকে কমে হলো ৬। সেই হিসেবে মেঘালয়ে প্রধান বিরোধী দল হলো তৃণমূল।
সূত্রের খবর, মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমার নেতৃত্বে ১৮ জন কংগ্রেস বিধায়কের ১২ জনই যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। জানা গিয়েছে, কংগ্রেস বিধায়করা ইতিমধ্যে বিধানসভার স্পিকারকে দলবদলের সিদ্ধান্তের কথা চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন। তবে সুস্মিতা দেবের পর মুকুল এমন একজন নেতা তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন, যাঁর উত্তর-পূর্বে জনভিত্তি রয়েছে।
কিন্তু মুকুল হঠাৎ কেন কংগ্রেস ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন? স্থানীয় সূত্রে খবর, মাস দেড়েক আগে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে পরিচিত লোকসভার সাংসদ ভিনসেন্ট পালাকে মেঘালয় প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি করা হয়। তার পর থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে ‘যোগাযোগ’ শুরু মুকুলের। এত দিনে তা পরিণতি পেল।
জানা যাচ্ছে, মেঘালয়ে তৃণমূলের এই ক্ষমতা সম্প্রসারণেও বড় ভূমিকা রয়েছে দলের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের কারণ, তাঁর সঙ্গে মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক বেশ ভাল। অন্যদিকে কিছুদিন আগেই কলকাতা ঘুরে গিয়েছেন মুকুল সাংমা। সেই সময় তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি বলে খবর।
যদিও কিছুদিন আগেও তাঁর দলবদলের জল্পনা উড়ি দিয়েছিলেন সাংমা। তবে সূত্রের খবর, তিনি যে কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন, সেটা বেশ কিছুদিন আগে থেকেই প্রকট হচ্ছিল। এখন সাংমার সঙ্গে সঙ্গে ১২ কংগ্রেস বিধায়কের তৃণমূলে যোগ দেওয়া বড় চমক তা বলাই যায়।
এদিকে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে যখন তৃণমূলের ক্ষমতা বৃদ্ধির খবর পাওয়া গেল, যখন তৃণমূল সুপ্রিমো দিল্লিতে। বুধবারই একাধিক বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লি সফরে তাঁর সঙ্গে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর কোনও বৈঠক আছে কিনা, বুধবার সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে দৃশ্যতই রুষ্ট দেখায় তাঁকে। সাফ জানিয়ে দেন, দিল্লি এলে সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক হবে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তাছাড়া কংগ্রেস নেতৃত্ব এখন পঞ্জাব রাজ্যের ভোট নিয়ে ব্যস্ত বলে জানান তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন পরিষ্কার বুঝিয়ে দেন, কংগ্রেস ছেড়ে নেতারা তৃণমূলে আসতে চাইলে স্বাগত। এতে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কে অবনতি হলেও যে তাঁদের অবস্থান বদল হবে না, তা বুঝিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী৷
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই হরিয়ানায় কংগ্রেসে বড়সড় ফাটল ধরিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন হরিয়ানার কংগ্রেস নেতা অশোক তনওয়ার এবং তাঁর অনুগামীরা। প্রাক্তন সাংসদ কীর্তি আজাদও কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন ৷ তারপর চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মেঘালয়ে কংগ্রেসকে জোরালো ধাক্কা দিল তৃণমূল ৷