কলকাতা ব্যুরো: রবিবার রাজ্যের ১০৭ পুরসভায় নির্বাচন। প্রতিটি বুথকেই স্পর্শকাতর হিসেবে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্য পুলিসেই আস্থা রেখেছে নির্বাচন কমিশন। আর বেলা গড়াতেই সামনে আসছে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ছবি। কোথাও ইভিএম ভাঙচুর, কোথাও বুথ এজেন্টকে ধরে মারধর আবার কোথাও এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ সামনে আসছে।

বসিরহাট থেকে বারাসাত, উত্তর ব্যারাকপুর থেকে রাজপুর সোনারপুর পুরসভা–দিকে দিকে উঠে আসছে ইভিএম ভাঙচুরের অভিযোগ। প্রতিটি ঘটনাতেই কাঠগড়ায় বিজেপি। তবে কি উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের হুঁশিয়ারির জেরেই কি এই পদক্ষেপ গেরুয়া শিবিরের? বিক্ষিপ্ত অশান্তির মাঝে জোরালো হচ্ছে সেই প্রশ্ন। আগেই ভোটপ্রচারে বেরিয়ে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় হুমকি দিয়েছিলেন। প্রয়োজনে ইভিএম ভাঙচুর করা হবে বলে দাবিও জানিয়েছিলেন তিনি। আর রবিবার পুরভোট শুরুর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই যেন তাঁর বাস্তব প্রতিফলন।

রবিবার প্রথমে ইভিএম ভাঙচুরের খবর আসে বসিরহাট থেকে। জানা গিয়েছে, ওই পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মন্দিরহাটা দেশপ্রিয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটাভুটি চলছিল। ভোটারদের দাবি, আচমকাই বিজেপি প্রার্থী সুজয় চন্দ্র ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ঢুকে পড়েন। ইভিএম ভাঙচুর করতে শুরু করেন। বিজেপি প্রার্থীর দাবি, ২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটে বেনিয়ম হচ্ছে। তাই ভোট করে কোনও লাভ নেই। এই যুক্তিতে ইভিএম ভেঙে দেন তিনি।

যদিও তৃণমূলের দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবে ভোটের দিন এলাকায় এভাবে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির। যদিও পুলিশ প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপি প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে।

অন্যদিকে বারাসাতের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ছবিটাও প্রায় একইরকম। এখানে ইভিএম ভাঙচুরের অভিযোগে কাঠগড়ায় বিজেপি। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ইভিএম ভাঙচুরের ফলে বেশ কিছুক্ষণ ভোটগ্রহণ স্থগিত হয়ে যায়। অর্জুন সিংয়ের গড় ভাটপাড়াতেও চলছে অশান্তি। জানা গিয়েছে ভাটপাড়ার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বুথের ভিতর ঢুকে কার্যত তাণ্ডব চালায় বিজেপি। ভাঙচুর করা হয় ইভিএম। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে ঘটনাস্থলে পৌঁছন আইসি-সহ বিশাল পুলিশবাহিনী। ওই ওয়ার্ডে ভোটপ্রক্রিয়া বেশ কিছুক্ষন বন্ধ হয়ে পড়ে।

এদিকে, উত্তর বারাকপুরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডেও ব্যাপক উত্তেজনা। বিজেপির বিরুদ্ধে ইভিএম ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডেও ইভিএম ভাঙচুর করে দুষ্কৃতীরা। তবে তারা কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত তা এখনও জানা যায়নি। পরিস্থিতি সামাল দিতে মৃদু লাঠিচার্জও করে পুলিশ। প্রত্যেকটি বুথে ইভিএম ভাঙচুরের ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version