কলকাতা ব্যুরো: ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে কমিশন এ রাজ্যে নির্বাচন সুচি ঘোষণা করলেও আজ থেকেই মোটামুটি রাজ্যে ভোটের হাওয়া এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গেল। ভোট ঘোষণার পরে তৃণমূল ২৯৪ টি বিধানসভায় তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছিল। পরবর্তীতে বাম-কংগ্রেস জোট ধাপে ধাপে প্রার্থী ঘোষণা করে। একই পথে হাঁটে বিজেপিও। কিন্তু বৃহস্পতিবার একসঙ্গে প্রায় দেড়শ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে ভোট ময়দানে বৃত্ত সম্পন্ন করল বিজেপি। এতদিনে সব বিধান সভায় সব দলের প্রার্থী ঘোষণা হয়নি। এদিন থেকে বিভিন্ন বিধানসভায় কার বিরুদ্ধে কে প্রার্থী বা কার তুলনায় কোন প্রার্থীর ইমেজ অথবা প্রভাব বেশি কিংবা কম তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়ে গেল।


বিজেপি এর আগে প্রার্থী ঘোষণার ক্ষেত্রে চারজন সাংসদকে বিধানসভার প্রার্থী করে কিছুটা চমক দিয়েছিল। আর এদিন সেই সূত্র ধরেই মুকুল রায়, শমীক ভট্টাচার্য, এমনকি রাহুল সিনহাার মত রাজ্যের প্রথম সারির কর্মকর্তাদের ভোটের ময়দানে নামিয়ে দিয়ে একটা নতুন চমক বা জল্পনা উসকে দিল। এদিনও বিজেপি তাদের এক লোকসভার সাংসদকে বিধানসভার প্রার্থী করেছে। ফলে গত দিন প্রকাশিত প্রার্থী তালিকার সঙ্গেই এদিনের নানান নাম নিয়ে আলোচনা আরো জোরদার হয়েছে।


তাহলে কি বিজেপি ক্ষমতায় আসলে কারা মন্ত্রী হবেন সেই পরিকল্পনা করেই দলের রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের মাঠে নামিয়ে দিল? এই জল্পনায় জোরালো হয়েছে। একদিকে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদকে উত্তরবঙ্গে প্রার্থী করেছে, আবার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় কে অরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে নামিয়ে দিয়েছে। এদিন বোলপুর থেকে যে প্রার্থী নাম ঘোষণা হয়েছে তাকে নিয়েও দলের মধ্যেই একটা ফিসফিসানি রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর মতো হেভিওয়েট মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এদিন যেসব প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ পেয়েছে তাদের কেউ কেউ থাকবেন বলে নিশ্চিত বিজেপির বর্ষিয়ান নেতারা। আবার এরইমধ্যে একেবারে শেষ বাজারে তৃণমূল বা সিপিএমের মতো অন্য দল ছেড়ে দেওয়া দলবদলুদের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি প্রার্থী করায়, ক্ষোভের আগুন জ্বলতে শুরু করেছে। গত কয়েকদিন ধরে অন্তত ১৫ টি বিধানসভায় যে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছিল সেখানকার প্রার্থীদের নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে দলের পুরোনো নেতাকর্মীদের। আবার এদিনও সেই তালিকায় এমন কিছু নাম দেখা গেছে যাদের কেন বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে, তা এখনও ঠাহর করতে পারছেন না ওইসব বিধানসভা এলাকার দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। যেভাবে তৃণমূল, সিপিএম থেকে ক্ষমতার মধু খেতে আসাদের গুরুত্ব দিয়ে টিকিট দিয়েছিল, সেই একই পথে বিজেপি হাঁটছে কিনা সেই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে উঠেছে।


এরইমধ্যে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা সৌমেন মিত্রর স্ত্রী শিক্ষা মিত্র বা তৃণমূল নেত্রী মালা সাহার স্বামীকে টিকিট দিয়ে বিজেপি নিজেদের বিরম্বনা আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে ফেলেছে। কারণ ওই দু’জন জানিয়ে দিয়েছেন, তারা বিজেপির প্রার্থী হতে আগ্রহী নন। এমনকি তাদের কোন অনুমতিও নেওয়া হয়নি। ফলে প্রার্থী করা নিয়ে দলের কিছু নেতার সিদ্ধান্ত যে বিজেপিকে এই বাজারে যথেষ্টই অস্বস্তিতে ফেলল, তা এককথায় নিশ্চিত।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version