কলকাতা ব্যুরো: বিধানসভা মোট ভোটের মুখে দুয়ারে সরকার নতুন প্রকল্প নিয়ে একেবারে কোমর বেঁধে নেমেছে সরকার। সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিতে মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে ‘দুয়ারে দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। সোমবার নবান্নে মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সরকারের কোনও প্রকল্পের সুবিধা যাঁরা পাননি বা আবেদন করেননি, তাঁরা যাতে নানা প্রকল্পের সুবিধা পান, সেজন্যই এই পদক্ষেপ। আবার তথ্য সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন এদিন তৃণমূল কার্যালয়ে বসে বলেন, রাজ্যের মানুষকে যাবতীয় সুবিধা পৌঁছে দিতেই এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুরসভার ওয়ার্ড ভিত্তিক রাজ্য জুড়ে এমন ২০ হাজার শিবির হবে । গ্রামাঞ্চলে বিডিওরা এবং শহরাঞ্চলে মহাকুমা শাসকরা এই শিবিরে আসা প্রত্যেক ব্যক্তিকে সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তরিত জানাবেন। শিবিরে কম্পিউটার নিয়ে সরকারি কর্মীরা উপস্থিত থাকবেন। তারাই ফরম ফিলাপ করিয়ে দেবেন।
মুখ্য সচিব বলেন, ‘চার দফায় এই কর্মসূচি রূপায়িত হবে। প্রথম দফা চলবে পয়লা ডিসেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় দফা চলবে ১৫ থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তৃতীয় দফা চলবে ২০২১ সালের ২ থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত। চতুর্থ দফা চলবে ১৮ থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রথম রাউন্ডেই যারা সঠিক কাগজপত্র সবকিছু দিয়ে দেবেন তারা দ্বিতীয় রাউন্ডে পরিষেবা পেয়ে যাবেন । যারা দ্বিতীয় রাউন্ডে বকেয়া কোন তথ্য তারা তৃতীয় রাউন্ডেই সঠিক পরিষেবা পেয়ে যাবেন।’
মুখ্যসচিব জানান, জেলাশাসক থেকে বিডিও পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকের সঙ্গে বারবার করে বৈঠক করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে কীভাবে কাজ হবে। এদিনও ভিডিও কনফারেন্স মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয় এবং সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তাঁদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারের দশটি প্রকল্পকে এই কর্মসূচির আওতায় রাখা হয়েছে সেগুলি হল স্বাস্থ্যসাথী ,শিক্ষাশ্রী, খাদ্যসাথী, কন্যাশ্র্‌ রূপশ্রী, ঐক্যশ্রী, জাতিগত শংসাপত্র , কৃষকবন্ধু , ‘জয় জোহার’ ও ১০০ দিনের কাজ।
এই ১০ টি সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে কী কী কাগজপত্র লাগবে তা নির্দিষ্ট করে দিতে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। শিবিরের পাশেই প্রদর্শনী করে সাধারণ মানুষকে জানিয়ে দেওয়া হবে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে কোন কোন তথ্য লাগবে। লোকপ্রসার শিল্পের অন্তর্গত শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করবেন। শিবির এই উপস্থিত সরকারি কর্মীরা কম্পিউটার নিয়ে বসবেন এবং সেখানেই আবেদনকারীর ফরম ফিলাপ করে দেবেন। যদি কোন আবেদনকারীর কাছে সঠিক কাগজপত্র না থাকে তাহলে তাঁকে বুঝিয়ে দেবেন কি কাগজ লাগবে এবং ওই কাগজ কোথা থেকে পাওয়া যাবে। পরিচয়পত্রের ক্ষেত্রেও বুঝিয়ে দেওয়া হবে কোন প্রকল্পে কী পরিচয় পত্র লাগবে। কল্পের সুবিধা পাবার ক্ষেত্রে যদি কারও অভিযোগ থাকে তাও এই শিবিরে সমাধান করা হবে। খাদ্যসাথী ক্ষেত্রে রেশন কার্ডের নাম পরিবর্তন ঠিকানা পরিবর্তনের কাজও এখানেই হবে।
বার ভোট বাজারে এই প্রকল্প সম্পর্কে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, আসলে সরকারি টাকায় পার্টির প্রচার করা হচ্ছে। এখানে সরকার আর পার্টির কোন তফাৎ নেই। সরকারের টাকাতেই পার্টি চলছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version