কলকাতা ব্যুরো: করোনার তৃতীয় ঢেউ অক্টোবরেই আছড়ে পড়তে পারে এদেশে। ফলে অক্টোবর- নভেম্বরে এদেশে ফের করোনার সংক্রমণ বাড়বে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকারের করোনা বিশেষজ্ঞদের কমিটি। আর এর জেরেই বাংলায় নতুন করে উসকে উঠেছে দুর্গাপুজোর উৎসবের ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা।
গতবছর কলকাতা হাইকোর্ট নজিরবিহীনভাবে দুর্গা পুজোর মন্ডপে নো এন্ট্রি জারি করায় সংক্রমণ যে ঠেকানো গিয়েছিল, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নাগরিক সমাজ। আর হাইকোর্টের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন চিকিৎসক ও পুলিশ কর্মীরা। শুধু দুর্গাপুজোয় নয়, তার পরবর্তী জগদ্ধাত্রী পুজো, কালীপুজো সহ বর্ষশেষের উৎসবেও রাজ্যে রাশ টেনে ছিল হাইকোর্ট। কিন্তু এবার কি হবে সেই প্রশ্নই করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আলোচনার সঙ্গেই ঘুরপাক খাচ্ছে বঙ্গে।

কুমোরটুলিতে ঠাকুর তৈরীর কাজ কিছুটা শুরু হলেও তেমনভাবে উৎসাহ নেই মৃৎ শিল্পীদের মধ্যে। কারণ এখনো তেমন বায়না হয়নি। আর এখানেই উঠে আসছে তৃতীয় ঢেউয়ের আতঙ্ক। করোনা নিয়ে গঠিত কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞানীদের কমিটির সদস্য মনিন্দ্র আগারওয়াল বলছেন, তৃতীয় ঢেউয়ের হামলায় করোনা সংক্রমণ আগের তুলনায় দ্রুত ছড়াবে। তবে তা কখনোই দ্বিতীয় ঢেউয়ের থেকে বেশি ভয়ঙ্কর হবে না বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
তাদের মতে, তৃতীয় ঢেউয়ের হামলায় দেড় লক্ষ থেকে দু লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন। যা দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় কমই হবে। আবার তৃতীয় ঢেউয়ে যারা আক্রান্ত হবেন, তাদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা কম হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসে করোনার হামলা দেশে প্রকট হবে বলে একরকম নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা
এবার ১১ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর দুর্গাপূজা হবে। আদবে করোনা র তৃতীয় ঢেউ হামলে পড়লে দুর্গাপুজোর উৎসব করা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কলকাতার বড় পুজোর উদ্যোক্তারা বলছেন, গত বছর অন্তত মণ্ডপ তৈরি থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলার পর শেষ মুহূর্তে হাইকোর্ট মানুষকে পুজোর মন্ডপে ঢুকতে নিষেধ করেছিল। তারপরেও সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যমের দৌলতে সেইসব মন্ডপ ও ঠাকুরের ছবি মানুষ ঘরে বসেই দেখতে পেয়েছিলেন। কিন্তু এবার আগাম তৃতীয় ঢেউয়ের সম্পর্কে জানতে পারায় আদবে দুর্গাপুজোর উৎসব নিয়ে সরকার বা হাইকোর্ট কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই বড় কথা।
এই উৎসবের সঙ্গে একটা বিশাল ব্যবসায়িক আর্থিক সম্পর্ক যুক্ত হয়ে রয়েছে। ফলে দুর্গাপূজা না হলে আবার একটা ব্যবসা মার খাবে। কিন্তু তৃতীয় ঢেউ হামলে পড়লে তাতে পুজোয় ভিড়ে বড় বিপদের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না পুজোর উদ্যোক্তারা।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version