কলকাতা ব্যুরো : কোথাও হালকা ভিড় । কোথাও বা উঁকি ঝুঁকিই সার। আবার কোথাও প্রতিমা আর মন্ডপকে মোবাইল বন্দী করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা। এই বাঙালির এবছর দুর্গা চতুর্থীর রাতের দূর্গা দর্শন। সশরীরে না থাকলেও আত্মিক যোগ যে পুজোর সঙ্গে রয়েছে তা বেশ স্পষ্ট। আবার খানিকটা নিজেদের পূজা শপিং কেও দায়ি করছে বাঙালি। কেনাকাটা এতটা না করলেই হতো। পুজোটা দেখা যেত। এমনও বলছেন অনেকে যারা শপিংয়ের থেকে পূজো দেখতে বেশি ভালোবাসেন। কলকাতার পুজোর আবহটা পেতে চান। কলকাতা ও শহরতলি ঘুরে চতুর্থীর সন্ধ্যায় এই রকমই মনে হলো ।
একডালিয়া এভারগ্রীন বা অন্যান্য বড় পূজামণ্ডপগুলোতে প্রতিমা দেখতে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না হাইকোর্টের রায় মেনে। সমস্যায় পড়ে গেছেন ৮০ শতাংশ ছোটো মণ্ডপগুলো। কলকাতার গলিতে যাদের পূজো হয়। “রায়টা অনেক আগে বেরোলেই ভালো হতো” গলায় অনেকটা উষ্মার সুর ঝরে পড়ছে ছোটো মণ্ডপের উদ্যোক্তাদের গলায়। অনেকে বলছেন, শেষ মুহূর্তে এই রকম একটা রায় আমাদের সব পরিশ্রম আর চিন্তাভাবনা শেষ করে দিয়ে চলে গেলো। শেষ মুহূর্তে বাঙালিকে হাইকোর্ট যারা দেখিয়ে দিলেন তারা যে আখেরে তাদের প্রচেষ্টা আর উদ্যমকে হারিয়ে দিলেন এমনি একটা অভিযোগ যেন উঠে আসছে। সব মিলিয়ে একটা অভিযোগ আর অনুযোগের সুর সব পূজো কর্তাদের মনে। অনেক দর্শনার্থীর মত , পূজো তো বছরে একবারই আসে । কিন্তু কি আর করা যাবে হাইকোর্টের রায়। হতাশা আর দীর্ঘশ্বাসের চতুর্থী বলে মনে হলো মণ্ডপ ঘুরে।
এদিকে ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের পক্ষ থেকে পরিষ্কার ভাবে জানানো হলো এই ভাবে হাইকোর্টের রায় মেনে দুর্গোৎসব মানে দুর্গোৎসব প্রায় বন্ধই হয়ে যাওয়া। কলেজ স্কোয়ার, লালাবাগান সবই আজ প্রায় দর্শক শূন্য। জেলায় হলদিয়া সিটি সেন্টারের পুজোতেও কোনো দর্শনার্থী নেই। সদরপুর ঘুরে দেখা গেলো মণ্ডপ ফাঁকা। অন্যদিকে চিকিৎসক সহ সমাজের অনেক মানুষই এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। খুশি তারা সবাই। কাল ফোরাম নো এন্ট্রি তুলে নিতে যে আর্জি হাইকোর্টকে করেছে তা আজ হাইকোর্ট গ্রহণ করেছে। অন্যদিকে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম থেকে এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত হবার আবেদন জানিয়ে নো এন্ট্রির সিদ্ধান্ত যাতে বলবৎ থাকে তার আর্জি জানানো হয় হাই কোর্টকে। শুনানি আগামীকাল। কোভিড আর দুর্গাপূজা বাংলার মানুষকে এমন সম্মুখ সমরে দাঁড় করিয়ে দেবে তা ভাবা যায় নি। একদিকে বাঙালির আবেগ আর একদিকে রূঢ় বাস্তব কার কোর্টে জয় হবে কাল তা সময়ই বলবে।