কলকাতা ব্যুরো: করোনা কমলেও একেবারে শেষ হয়ে যায়নি মহামারীর প্রকোপ। তাই এবছরের পুজোতে যাতে কোনওভাবেই ভিড় না হয় সেই জন্য অতিরিক্ত সতর্ক রাজ্য। পুজো নিয়ে মঙ্গলবার ১১ দফার নির্দেশিকা জারি করলো নবান্ন। রাজ্যের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে রেড রোডে যে কার্নিভাল আয়োজিত হয় তা এই বছর হবে না।

পাশাপাশি কোনও পুজো মণ্ডপেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না। মণ্ডপগুলি খোলামেলা রাখতে হবে। মণ্ডপের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় যাতে রাখা হয়, তা সুনিশ্চিত করতে হবে।

একনজরে দেখে নিন কী কী বলা হয়েছে নির্দেশিকাতে?

মণ্ডপ হবে চারিদিক খোলা।

প্রবেশ এবং বেরনোর পথ হবে আলাদা।

শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য মণ্ডপে যথেষ্ট জায়গা রাখতে হবে।

মণ্ডপে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং মাস্কের ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক।

যত বেশি সম্ভব স্বেচ্ছাসেবককে মণ্ডপে রাখতে হবে। মাস্কে মুখ ঢাকতে হবে তাঁদেরও। দর্শনার্থীদের পাশাপাশি তাঁদেরও মানতে হবে শারীরিক দূরত্ব। 

পুজোর সময় অঞ্জলি, সিঁদুরখেলা বা দেবীবরণের মতো রীতিনীতিকে এবার ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে ছোট-ছোট গ্রুপে মেটাতে হবে এই রীতি।

মন্ত্রচ্চারণের সময় পুরোহিতদের মাইক্রোফোন ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যাতে দূর থেকে সেই মন্ত্র শুনতে পান পুণ্যার্থীরা।

অঞ্জলির ফুল বাড়ি থেকে আনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পুজো মণ্ডপে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে করা চলবে না।

পুরষ্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে বিচারকরা ভিড় করে মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারবেন না। সর্বোচ্চ দু’টি গাড়ি নিয়ে মণ্ডপে ঢুকতে পারবেন তাঁরা। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩ পর্যন্ত মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারবেন বিচারকরা।

ভিড় কমাতে পুজো কমিটিগুলিকে বৈদ্যুতিন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় লাগাতার প্রচারের পরামর্শ দিয়েছে রাজ্য। 

পুজো উদ্বোধন কিংবা বিসর্জনে বেশি জাঁকজমক চলবে না। সম্ভব হলে ভারচুয়ালি সারতে হবে পুজো উদ্বোধন। 

নদী বা পুকুরে বিসর্জনের ক্ষেত্রে সময় বেঁধে দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট টাইম স্লট মেনেই প্রতিমা নিরঞ্জন করতে হবে। মণ্ডপ থেকে প্রতিমা সরাসরি ঘাটেই আনতে হবে। মাঝে অন্য কোথাও দাঁড়ানো চলবে না।

প্রয়োজনীয় অনুমতি নিতে হবে অনলাইনে।

করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের তরফে কার্নিভালের আয়োজন করা হচ্ছে না।

রাজ্যের তরফে পুজো কমিটিগুলিকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত পুজোর সময় এবারও মণ্ডপে থাকছে ‘নো এন্ট্রি’। করোনাকালে এ বছরের পুজোতে দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। গতবছরের নির্দেশই এবছরও বহাল রাখলো আদালত। গত শুক্রবার এই নির্দেশ দেয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যের তরফে জানানো হয় নির্দেশ জারি থাকলে কোনও আপত্তি নেই। ফলে এবারও দুর্গাপুজো ও কালীপুজোয় দর্শকশূন্য থাকবে মণ্ডপ।

এদিকে, শ্রেষ্ঠ উৎসবের আগে বাঙালির মুখে হাসি। করোনাকালের জেরে রাজ্যে জারি বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও একমাস বাড়ানো হলেও পুজোর দিনগুলোর জন্য রাশ আলগা করা হল নৈশ নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত গোটা রাজ্যে কোভিড নিয়ন্ত্রণে জারি বিধিনিষেধ জারি থাকবে।

পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, আগামী ১০ থেকে ২০ অক্টোবর নৈশ নিয়ন্ত্রণ আগলা করা হচ্ছে। উৎসবের মরশুমের কথা মাথায় রেখে জনসাধারণ ও গাড়িঘোড়ার রাত ১১ টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বাইরে বোরনোর ক্ষেত্রে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে না অর্থাৎ মহাপঞ্চমী থেকে লক্ষ্মী পুজো পর্যন্ত রাজ্যে নৈশকালীন নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে না।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version